চিত্র সৌজন্য:- গুগুল
####গুরুচণ্ডা৯ বইমেলা সংখ্যা ২০১৩ তে প্রকাশিত ।
*****************
মাইরী
বলছি, গুরু বলতে আমাদের একজনই ছিল ! যে সে
গুরু নয় !!!! এক্কেরে খোদ মহাগুরু ! কত মেয়ে যে নীরবে চোখের জল ফেলেছে, গুরুর জন্য ! সব
জল জমেই তো এখনও পর্যন্ত কোলকাতার বুকে জলের অভাব নেই ! সারা পশ্চিমবঙ্গে, এমনকি
খোদ বাঁকুড়া-পুরুলিয়াতে জল-জল বলে যে মাঝে মাঝে হাহাকার ওঠে, গুরুর সময় সে সব ছিল
না ।
আমরা
যারা গুরুর কাছে ইনডায়রেক্টলি দীক্ষা নিয়েছিলাম- সব সময় গুরুর হেয়ার এষ্টাইল,
সার্ট, পেণ্টুলুন পরার টুকলি করতাম । কারণ একটাই ! আঠেরো থেকে আশি
সব মেয়ে/ মহিলা / নারী ফিদা গুরুর জন্য ! উডু উডু অ্যালবাট
চুল,পেছনে ইউ কাট; বঙ্কিম গ্রীবা, হৃদয় তোলপাড় করা হাসি
নিয়ে গুরু আমাদের সক্কলকে জ্বালিয়ে দিয়েছিল ।
ধুতি
পরলে, গায়ে গোটানো হাতা কলার দেওয়া ফুলজামা ! নিজেকে ঘ্যামা লাগত ! আড়ে – আগে
দেখতাম- মেয়েরা তাকাচ্ছে কিনা !
গিলে করা আদ্দির পাঞ্জাবী,
কোঁচান ধুতি পরে গুরু, পুরো রূপকথার
রাজপুত্তুর !!!!
চোখ চিনচিন করে, মাথা টনটন করে, বুক ধঢ়পঢ় করে সে সব কথা ভাবলে ! গুরু
যখন হাফসোল খেয়ে আমাদের দিকে তাকাত- জান, লবেজান্-হালাকান্ ! ওফ্ ! ভাবলেই পেটের
মধ্যে গুড়গুড় !
গুরুর গাড়ী ছিল অ্যাম্বাসাডর। নাম্বার, ডব্লুউ এম সি ৮৭৮৭। বনেটের নিচে
দুটো ফগ লাইট, প্রথম থেকেই ছিল। এ গাড়ি ছাড়া অন্য গাড়িতে চড়তেন না আমাদের পরম
আরাধ্য। রাস্তায় যদি দৈবাৎ চোখে পড়ত, তখন
সেই রাস্তায় গড়াগড়ি খেয়ে পিচের আলকাতরা গায়ে মেখে নিতাম । ট্র্যাফিক জাম্ ! পেছনে
পুলিশের রুল কোনোকিছুই “দ্যাবায়ে” রাখতে পারত না !!!!!!! গুরুর পদ-রজ না পাই,
গাড়ী-রজ তো পেতাম, সেটাই বা কে দ্যায় ? রোদে পুড়েছি, বৃষ্টিতে ভিজেছি, শীতে কেঁপেছি-
খালি গুরুকে একপলক নিজের চোখে দেখার জন্য ।
গুরু ম্যাজিক আচ্ছন্ন করে রেখেছিল
বাঙালিকে ! আর কোনো গুরু হালে পানি পেতো না ! আশ্রম সব খাঁ খাঁ করছে !
ঝাড়া ৩২ বছর ধরে গুরু রাজত্ব করে চলে গেল মাত্র ৫৪ বছর বয়সে !
দিনটা ছিল ১৯৮০ সালের ২৪ শে জুলাই !
ইষ্টনাম :- উ-ত্ত-ম-কু-মা-র ফুটুস ! আর আমাদেরও ফুটুর
ডুম্ !!!!
-
-
No comments:
Post a Comment