Monday, May 27, 2013

পঞ্জিকা

পঞ্জিকা বা ক্যালেন্ডার হলো দিন সমূহকে হিসাব করার জন্য ব্যবহৃত পদ্ধতি।
পঞ্জিকা অপভ্রংশে পাঁজি, নামটি এসেছে পঞ্চাঙ্গ থেকে। পঞ্চাঙ্গের অর্থ পঞ্জিকার ৫টি অঙ্গ।
1. বার বা বাসর: – সোমবার থেকে রবিবার বা সোমবাসর থেকে রবিবাসর।এই প্রত্যেকটি নাম গ্রহ থেকে এসেছে। রবি- সূর্য্য, সোম- চন্দ্র, মঙ্গল, বুধ, বৃহস্পতি বা গুরু, শুক্র বা ভার্গব, শনি। 2. তিথি: – সূর্য্যের সঙ্গে সংযোগের হিসাবে চান্দ্রমাসের গড় মান-২৯.৫৩ দিন। চান্দ্রমাস কাকে বলা হয়? এক অমাবস্যা থেকে ঠিক পরের অমাবস্যা পর্য্যন্ত সময়কে সাধারণত ১ চান্দ্রমাস বলা হয়। চান্দ্রমাসের নামকরণ কিভাবে হয়? আমরা জানি ১২ টি সৌরমাস। যথা:- ১. বৈশাখ( বিশাখা নক্ষত্র থেকে নাম এসেছে) ২. জ্যৈষ্ঠ(জ্যেষ্ঠা নক্ষত্র থেকে নাম এসেছে) ৩.আষাঢ়(পূর্বাষাঢ়া নক্ষত্র থেকে নাম এসেছে) ৪. শ্রাবণ (শ্রবণা নক্ষত্র থেকে নাম এসেছে) ৫.ভাদ্র (পূর্বভাদ্রপদ নক্ষত্র থেকে নাম এসেছে) ৬. আশ্বিন (অশ্বিনী নক্ষত্র থেকে নাম এসেছে) ৭.কার্ত্তিক ( কৃত্তিকা নক্ষত্র থেকে নাম এসেছে) ৮. অগ্রহায়ণ ( অপর নাম- মার্গশীর্ষ, মৃগশিরা নক্ষত্র থেকে নাম এসেছে) ৯. পৌষ (পুষ্যা নক্ষত্র থেকে নাম এসেছে) ১০. মাঘ (মঘা নক্ষত্র থেকে নাম এসেছে) ১১.ফাল্গুন (পূর্বফল্গুনি নক্ষত্র থেকে নাম এসেছে) ১২.চৈত্র (চিত্রা নক্ষত্র থেকে নাম এসেছে) । আমরা বৈশাখ থেকে আরম্ভ করি। এই মাসের কোন না কোন দিনে অমাবস্যা পড়বে। এই অমাবস্যা থেকে পরের অমাবস্যা পর্যন্ত ১ চান্দ্র বৈশাখ বলা হয়। এইভাবে ১২টি চান্দ্রমাস হবে। যদি একই মাসে ২ টি অমাবস্যা পড়ে, তবে সেই চান্দ্রমাস মলমাস হিসাবে গণ্য হবে। আগেই বলা হয়েছে যে, এক চান্দ্রমাসের মান ২৯.৫৩ দিন। ২৯.৫৩ কে পূর্ণসংখ্যাতে রুপান্তরিত করলে হয় ৩০। এই ৩০ দিনকে ৩০ টি সমান ভাগে ভাগ করে, এক একটি অংশকে বলা হয় তিথি। তিথি হলো ১ চান্দ্রদিন। এবার প্রশ্ন কেন? অমাবস্যা কে আদি তিথি বা ১ম দিন ধরা হয়। যখন চন্দ্র ও সূর্য্যের একই সরলরেখায় মিলন হয় তখন অমাবস্যা হয় । সুতরাং তিথি= ১ চান্দ্রদিন। অমাবস্যার পরের দিন প্রতিপদ বা প্রথমা এবং শুরু শুক্লপক্ষ। সুতরাং অমাবস্যার পরের দিন শুক্লপক্ষের প্রতিপদ বা প্রথমা। চন্দ্র, সূর্য্যের সাপেক্ষে ১২ ডিগ্রী কৌণিক দূরত্ব (angular distance) অতিক্রম করলেই প্রতিপদ বা প্রথমার শেষ এবং শুক্লা দ্বিতীয়ার আরম্ভ। পক্ষ ২টি। শুক্লপক্ষ এবং কৃষ্ণপক্ষ। পক্ষ সাধারণত ১৫ দিনের। অমাবস্যা থেকে পরের ১৫ দিন পর পূর্ণিমা। এই ১৫ দিন শুক্লপক্ষ । আবার পূর্ণিমা থেকে পরের ১৫ দিন পর অমাবস্যা। এই ১৫ দিন কৃষ্ণপক্ষ। সুতরাং ১ চান্দ্রমাসের ১ম ১৫ দিন শুক্লপক্ষীয় এবং ২য় ১৫ দিন কৃষ্ণপক্ষীয়। তিথি, যে কোন দিনাঙ্কের যে কোন সময়ে শুরু হতে পারে; দিনে অথবা রাত্রিতে। সাধারণত পঞ্জিকার যে কোন দিনাঙ্কের সূর্য্যোদয়ের সময় যে তিথি চলছে সেটাই সেই সৌরদিনের তিথি হিসাবে গণ্য হবে। তিথির মান ২০ থেকে ২৭ ঘণ্টা পর্য্যন্ত হতে পারে। এর কারণ চন্দ্রের জটিল গতি। চন্দ্র পৃথিবীকে কেন্দ্র করে এক কক্ষপথে ঘুরে চলেছে, এটা আমরা সবাই জানি। কক্ষপথটি কিন্তু উপবৃত্তাকার (Elliptical)| যার ফলে চন্দ্রের গতি সেই কক্ষপথে সব জায়গায় সমান নয়। কখনো ধীরে, কখনো জোরে।–আর সেই জন্যেই তিথির মান ২০ থেকে ২৭ ঘণ্টা পর্য্যন্ত হয়। সুতরাং, পাঁজির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য হোল তিথি ।
এবার নক্ষত্র: – নক্ষত্র ২৭ টি। ক্রমানুসারে ২৭ টি নামগুলি হোল: – ১। অশ্বিনী ২। ভরণী ৩। কৃত্তিকা ৪। রোহিণী ৫। মৃগশিরা ৬।আর্দ্রা ৭। পুনর্বসু ৮। পুষ্যা ৯। অশ্লেষা ১০। মঘা ১১। পূর্বফাল্গুনি ১২। উত্তরফাল্গুনি ১৩। হস্তা ১৪। চিত্রা ১৫। ¯^vZx ১৬। বিশাখা ১৭। অনুরাধা ১৮। জ্যেষ্ঠা ১৯। মূলা ২০। পূর্বাষাঢ়া ২১। উত্তরাষাঢ়া ২২। শ্রবণা ২৩। ধনিষ্ঠা ২৪। শতভিষা ২৫। পূর্বভাদ্রপদ ২৬। উত্তরভাদ্রপদ ২৭। রেবতী । এছাড়াও অভিজিৎ নামেও আরও একটি নক্ষত্র আছে। উত্তরাষাঢ়ার শেষ পাদ এবং শ্রবণার প্রথম পঞ্চদশাংশ ব্যাপীয়া অভিজিৎ নক্ষত্র গণণা করা হয়। অর্থাৎ: – ৯ রাশি ৬ অংশ ৪০ কলা থেকে ৯ রাশি ১০ অংশ ৫৩ কলা ২০ বিকলা পর্য্যন্ত। এখন নক্ষত্র বলতে কি বুঝব? মূলত চন্দ্র রাশিচক্রের (প্রকৃতপক্ষে চান্দ্রমার্গের) ৩৬০ডিগ্রী ঘুরে আসে। এই চন্দ্র রাশিচক্রের ভাগ ২৭ টি। প্রত্যেকের ব্যবধান হোল ১৩ ডিগ্রী ২০ মিনিট । এই এক একটি ভাগকে নক্ষত্র বলা হয়। এই ভাগের প্রধান উজ্জ্বল তারাকে যোগতারা বলা হয়। কোন দিন কোন নক্ষত্র বললে বুঝতে হবে চন্দ্রের অবস্থান নক্ষত্রের ১৩ ডিগ্রী ২০ মিনিট সীমানার মধ্যে। করণ: – করণ হোল তিথির ১/২ বা অর্ধাংশ। যে কোন তিথির প্রথম অর্ধাংশ একটি করণ, দ্বিতীয় অর্ধাংশ অন্য একটি করণ। সুতরাং ৩০টি তিথিতে ৬০ টি করণ। করণের নামসমূহ: – ১। বব ২। বালব ৩। কৌলব ৪। তৈতিল ৫। গর ৬। বণিজ ৭।বিস্টি ৮।শকুনি ৯।চতুষ্পাদ ১০। নাগ ১১।কিন্তুঘ্ন প্রথম ৭টি করণ চরকরণ বা সাধারণকরণ। পরের ৪টি স্থিরিকরণ। ৪টি স্থিরিকরণ বিশেষ বিশেষ তিথির বিশেষ বিশেষ অর্ধাংশে প্রযোজ্য। কৃষ্ণচতুর্দশীতে-১টি, অমাবস্যায় -২টি, শুক্ল প্রতিপদে- ১টি । এই ৪টি স্থিরিকরণ । এই ৪টি বাদ দিলে থাকে ৫৬ টি করণ। এই ৫৬ টি করণের প্রথম ৭টি চরণাকরণের পৌনঃপুনিক (জবপঁৎৎরহম) মাত্র। যোগ: – পঞ্জিকার শেষের অঙ্গটি হলো যোগ। সূর্য্য ও চন্দ্রের দুইয়ের নিরয়ণস্ফুট (Longitude) যা দেওয়া থাকে তাদের যোগফলকে ১৩.৩৩ দিয়ে ভাগ করলে যা থাকবে – তাই যোগ। তিথি ও নক্ষত্রের মত যোগেরও অন্তকাল থাকে। যোগ ২৭ টি: – (ক্রমানুসারে) ১। বিষ্কুম্ভ ২। প্রীতি ৩। আয়ুষ্মান ৪। সৌভাগ্য ৫। শোভন ৬। অতিগন্ড ৭। সুকর্মা ৮। ধৃতি ৯। শূল ১০। গন্ড ১১। বৃদ্ধি ১২। ধ্রুব ১৩। ব্যাঘাত ১৪। হর্ষণ ১৫। বজ্র ১৬। অসৃক ১৭। ব্যাতিপাত ১৮। বরীয়ান ১৯। পরিঘ ২০। শিব ২১। সিদ্ধ ২২। সাধ্য ২৩। শুভ ২৪। শুক্র (শুক্ল) ২৫। ব্রহ্ম ২৬।ইন্দ্র ২৭। বৈধৃতি এগুলো গেল পঞ্জিকার সময় গণণা। এবার আসি পূজার সময় নিরূপণ। ১ অনুপল= ০.০০৪ সেকেন্ড। ৬০ অনুপল= ১ বিপল=০.২৫ সেকেন্ড। ৬০ বিপল= ১ পল=১৫ সেকেন্ড। ৯৬ পল= ১ দন্ড = ২৪ মিঃ। ২.৫ দন্ড =১হোরা =১ আওয়ার বা ঘন্টা। ৭.৫ দন্ড = ১ প্রহর = ৩ আওয়ার বা ঘন্টা। ৮ প্রহর = ১ দিবস (দিন+রাত্রি) বা অহোরাত্র। হোরা থেকে অহোরাত্র এসেছে। এখানে একটা জিনিস লক্ষণীয় যে ইং hour এবং হোরা শব্দটির সাদৃশ্য।
৩ দিন ও রাত্রির ভাগ এরকম: – ২৫ দন্ড = দিন = ১০ ঘণ্টা । ৩৫ দন্ডে রাত্রি =১৪ ঘণ্টা । এটা কিন্তু general । ঋতু এবং সূর্য্যোদয়ের সঙ্গে দিন ও রাত্রির ভাগ পাল্টাবে। সূর্য্যোদয়ের সময়ের একটা বড় ভূমিকা কি পঞ্জিকা, কি পূজা সময়ের ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ। ঘটিকা: -১ দন্ড বা ২৪ মিঃ কে ঘটিকা বলা হয়। মুহূর্ত্ত = ২ দন্ড বা ৪৮ মিঃ । ব্রাহ্মমুহূর্ত্ত= সূর্যোদয়ের ২ মুহূর্ত্ত আগে অর্থাৎ ৯৬ মিঃ আগে বা ১ ঘণ্টা ৩৬ মিঃ পূর্বে। প্রদোষ= সূর্য্যাস্ত হতে ৫ দন্ড বা ২ ঘন্টা। রাত্রির প্রথম অর্ধপ্রহর বা ১ ঘণ্টা ৩০ মিঃ এবং শেষ অর্ধপ্রহরকে “দিবা” বলে। প্রথম অর্ধপ্রহরের পর অর্থাৎ ১ ঘণ্টা ৩০ মিঃ পর ৬ দন্ড বা ২ ঘণ্টা ২৪মিঃ কে বলে “রাত্রি”। তাহার পর ১০ দন্ড কাল বা ৪ ঘণ্টা কাল নিশা ও মহানিশা। 
তথ্যসূত্র: – শ্রী অমলেন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়- জোর্তিবিজ্ঞানী, বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা ও জগন্মোহন তর্কালঙ্কার প্রণীত নিত্য পূজা পদ্ধতি)
এই প্রবন্ধটি অলঙ্করণ সহ বাংলা উইকি আমার আসল নামে-( রামকৃষ্ণ ভট্টাচার্য্য)
নথীভুক্ত করেছে।

Friday, May 24, 2013

গুরুবে নমঃ

চিত্র সৌজন্য:- গুগুল

 ####গুরুচণ্ডা৯ বইমেলা সংখ্যা ২০১৩ তে প্রকাশিত 



*****************
মাইরী বলছি, গুরু বলতে আমাদের  একজনই ছিল ! যে সে গুরু নয় !!!! এক্কেরে খোদ মহাগুরু ! কত মেয়ে যে নীরবে চোখের জল ফেলেছে, গুরুর জন্য‍ ! সব জল জমেই তো এখনও পর্যন্ত কোলকাতার বুকে জলের অভাব নেই ! সারা পশ্চিমবঙ্গে, এমনকি খোদ বাঁকুড়া-পুরুলিয়াতে জল-জল বলে যে মাঝে মাঝে হাহাকার ওঠে, গুরুর সময় সে সব ছিল না ।
আমরা যারা গুরুর কাছে ইনডায়রেক্টলি দীক্ষা নিয়েছিলাম- সব সময় গুরুর হেয়ার এষ্টাইল, সার্ট, পেণ্টুলুন পরার টুকলি করতাম । কারণ একটাই ! আঠেরো থেকে আশি সব মেয়ে/ মহিলা / নারী ফিদা গুরুর জন্য ! উডু উডু অ্যালবাট চুল,পেছনে ইউ কাট; বঙ্কিম গ্রীবা, হৃদয় তোলপাড় করা হাসি নিয়ে গুরু আমাদের সক্কলকে জ্বালিয়ে দিয়েছিল ।
ধুতি পরলে, গায়ে গোটানো হাতা কলার দেওয়া ফুলজামা ! নিজেকে ঘ্যামা লাগত ! আড়ে – আগে দেখতাম- মেয়েরা তাকাচ্ছে কিনা !
গিলে করা আদ্দির পাঞ্জাবী, কোঁচান ধুতি পরে গুরু, পুরো রূপকথার রাজপুত্তুর !!!!
চোখ চিনচিন করে, মাথা টনটন করে, বুক ধঢ়পঢ় করে সে সব কথা ভাবলে ! গুরু যখন হাফসোল খেয়ে আমাদের দিকে তাকাত- জান, লবেজান‌্-হালাকান্ ! ওফ্ ! ভাবলেই পেটের মধ্যে গুড়গুড় !
গুরুর গাড়ী ছিল অ্যাম্বাসাডর। নাম্বার, ডব্লুউ এম সি ৮৭৮৭। বনেটের নিচে দুটো ফগ লাইট, প্রথম থেকেই ছিল। এ গাড়ি ছাড়া অন্য গাড়িতে চড়তেন না আমাদের পরম আরাধ্য। রাস্তায়  যদি দৈবাৎ চোখে পড়ত, তখন সেই রাস্তায় গড়াগড়ি খেয়ে পিচের আলকাতরা গায়ে মেখে নিতাম । ট্র্যাফিক জাম্ ! পেছনে পুলিশের রুল কোনোকিছুই “দ্যাবায়ে” রাখতে পারত না !!!!!!! গুরুর পদ-রজ না পাই, গাড়ী-রজ তো পেতাম, সেটাই বা কে দ্যায় ? রোদে পুড়েছি, বৃষ্টিতে ভিজেছি, শীতে কেঁপেছি- খালি গুরুকে একপলক নিজের চোখে দেখার জন্য ।
গুরু ম্যাজিক আচ্ছন্ন করে রেখেছিল বাঙালিকে ! আর কোনো গুরু হালে পানি পেতো না ! আশ্রম সব খাঁ খাঁ করছে  !
ঝাড়া ৩২ বছর ধরে  গুরু রাজত্ব করে চলে গেল মাত্র ৫৪ বছর বয়সে ! দিনটা ছিল ১৯৮০ সালের ২৪ শে জুলাই !

ইষ্টনাম  :- উ-ত্ত-ম-কু-মা-র ফুটুস ! আর আমাদেরও ফুটুর ডুম্ !!!!
-



তুলসী চক্রবর্তী


প্যাপিরাসে প্রকাশিত
*****************
চিত্র সৌজন্য :- গুগুল

বাংলা সিনেমার স্বর্ণযুগ যে- সোনা হয়ে উঠতে পেরেছিলো তার অন্যতম কারণ তুলসী চক্রবর্তীর মত অভিনেতারা ছিলেন বলে।

"সাড়ে ৭৪"-এ তুলসী চক্রবর্তী আর মলিনা দেবীকে ছেড়ে যেন উত্তম-সুচিত্রার দিকে চোখই যায়না |

প্রথম সিনেমায় অভিনয় : -১৯৩২ এ। ছবির নাম ছিল- পুর্নজন্ম।
হ্যাঁ! আমার যতদূর জানা আছে, তুলসী চক্রবর্তী মেঘে ঢাকা তারা হয়েই ছিলেন। কিন্তু, তাতে তাঁর কোনো খেদ ছিল না। তিনি, এই রকম উপেক্ষাতেই অভ্যস্ত ছিলেন। বাংলা সিচুয়েশন কমেডির ভাণ্ডার একেবারে শূন্য নয়, কিছু কিছু রত্ন সেখানে রয়েছে, যেখানে তুলসী চক্রবর্তী একটি উজ্জ্বল রত্ন। অনেকদিন আগে একটা পত্রিকায় পড়েছিলাম( নামটা মনে নেই) : - শীতে কষ্ট পাচ্ছিলেন বলে, অনুপকুমার তুলসী চক্রবর্তীকে একটা কোট কিনে দিয়েছিলেন। সেটা পেয়ে কেঁদে ফেলেছিলেন সন্তানহীন তুলসী চক্রবর্তী। অনুপকুমারকে জড়িয়ে ধরেছিলেন ছেলে হিসেবে। পরশপাথর ছবিতে সত্যজিৎ রায় তুলসী চক্রবর্তীকে মুখ্য চরিত্রে নির্বাচিত করায়, আর এক দফা হাউ হাউ করে কেঁদেছিলেন। এই ছবিতে অভিনয় করার জন্য কত পেয়েছিলেন, জানলে আপনাদের চোখে জল আসবে। মাত্র, ১৫০০ টাকা। ৩১৬ টার মত বাংলা ছবিতে অভিনয় করেছিলেন। কোথাও নামমাত্র পয়সা বা কোথাও সবিনয় অনুরোধে, বিনে পয়সায় অভিনয় করতেন, এই অসাধারণ অভিনেতা। হাওড়ার শিবপুরে, নিজের বাড়ীতে ট্রাম ধরে ফিরে যেতেন স্যুটিং এর পর। টাক মাথা, ধুতি হাফ ফতুয়া পরা এই ভদ্রলোক পৌরহিত্য করতেন টাকার জন্য।

পরশপাথরে অভিনয়ের সময়, সত্যজিৎ রায় তুলসী বাবুকে ট্যাক্সি করে যাতায়াতের জন্য পরামর্শ দিয়ে হাতে টাকা দিয়েছিলেন। দুদিন যাতায়াতের পর তিনি সত্যজিৎ রায় কে বলেন : -এই ট্যাক্সি করে যাতায়াত কোরতে তিনি পারছেন না। এতে তিনি তাঁর অভিনয়ের স্বত: স্ফূর্ততা হারিয়ে ফেলছেন। তারপর থেকে তিনি আবার ট্রামেই যাতায়াত শুরু করেন।




আজকালকার দিনে, কেউ ভাবতে পারবেন- এই কথা? অভিনয় করতেন কোনো মেক আপ ছাড়াই। খালি গায়ে স্যুটিং থাকলে তাঁর পৈতে দেখা যেত।
৩ রা মার্চ, ১৮৯৯ সালে হাওড়া জেলার গোয়ারী গ্রামে জন্ম। বাবা আশুতোষ চক্রবর্তী রেলে কাজ করতেন বলে, পড়াশোনার জন্য কাকা প্রসাদ চক্রবর্তীর কাছে থাকতেন, তুলসী চক্রবর্তী। প্রসাদবাবু, ষ্টার থিযেটারে হারমোনিয়াম আর তবলা বাজাতেন। সেই সূত্র ধরেই অভিনয় জগতে প্রবেশ। ত্‌ৎকালীন ষ্টার থিযেটারের মালিক ছিলেন- অপরেশ চন্দ্র মুখোপাধ্যায়। মাত্র ১৭ বছর বয়সেই চোখে পড়ে যান অপরেশবাবুর। সালটা ছিল ১৯১৬। এই অপরেশবাবুই তালিম দেন তুলসী চক্রবর্তীকে। টপ্পা গান, পাখোয়াজ বাজানো সব শিখেছিলেন। ১৯২০ তে প্রথম ষ্টেজে অভিনয় করেন। নাটকের নাম ছিল : - দুর্গেশনন্দিনী। ১৯২৭ সাল পর্যন্ত তিনি ষ্টার থিযেটারেই ছিলেন। পরে যোগ দেন, মনমোহন থিয়েটারে। ১৯৬০ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪২টা নাটকে অভিনয় করেন। শেষ নাটক ছিল- শ্রেয়সী ( ১৯৬০)। তার পর তাঁর শারীরিক অসুস্থতার জন্য ( হৃদযন্ত্র) আর নাটকে অভিনয় করেন নি।


১১ ই ডিসেম্বর ১৯৬১ তে হঠাৎ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এই অভিনেতা। পয়সাও ছিল না চিকিৎসার জন্য। প্রচণ্ড দারিদ্র তো ছিলই, তার ওপরে নিজের বাড়ীটা দান করেছিলেন এলাকার দরিদ্র পুরোহিতদের জন্য। স্ত্রী উষারাণী দুয়ারে দুয়ারে ঘুরেছেন একমুঠো খাবারের জন্য।
মারা যাবার পর সরকারের তরফ থেকে শেষ শ্রদ্ধা জানানোরও কোনও বন্দোবস্ত ছিল না তখন। অবশ্য তাতে কিছু আসে যায় না . তিনি আছেন . বাঙালির অন্তরে আছেন . থাকবেনও।

তুলসী চক্রবর্তী অমর রহে।

ঠেক


সৃষ্টিতে প্রকাশিত

সন্ধে সাড়ে ছটা বেজে গেজে, তবুও আজ চেম্বারে রুগীর বেশ ভিড়! সন্ধে সাতটার পর চন্দন ভাদুড়ী আর রুগী দেখে না, সাধারণতপ্রাণটা হাঁসফাঁস করে, একটু বিশুদ্ধ আড্ডার জন্যঅক্সিজেন পেয়ে তৈরি হয়, পরের দিনের তরে আজকের দিনে রাজা- গজা নেই ! তবুও, মাথার ওপরে একজন থাকা দরকার ! সেই মাথাটা হলেন- আড্ডার মধ্যমণি রাজা- ক্ষেতু বাগচী । সঙ্গে, গজারা হলেন- তারক মোত্তির, নাটু লাহিড়ী ‍! ওনারা এখনও কেউ এসে পৌঁছন নি !
আজ তাই, অন্যমনস্ক হয়েছিল চন্দনসত্য কম্পু একটা প্রেসক্রিপশন নিয়ে ঢুকলেন
- একি! চন্দন বাবু! আফনে , আজকের ডেট লিখতে রঙ করসেন, হোয়াই!
- কেন? ঠিক লিখি নি?
- নো! টুডে কি, একোত্তিশ- নাইন -দুহাজার টুয়েলভ? আজ তো ফাষ্ট অক্টোবর- দশ- টু থাউজাণ্ড বারো!!!!!!!!!
চন্দন জিভ কেটে তারিখটা ঠিক করলসত্য কম্পুর খুব ইংরেজি বলার অভ্যেসতাঁর ইংরেজি শুনে অনেকেই থরথর করে কাঁপেতাই নাম সত্য কম্পু! অবশ্য তিনি, চেম্বারের কম্পাউন্ডারও বটেনোয়াখালীর আদি বাসিন্দা! এখনও কথায় কথায় মাতৃভাষা, সত্য কম্পুর মুখ নিঃসৃত হয়
গতকালই সত্য কম্পু বলেছিলেন:- দি ফিফল অফ নুয়াখালি ক্যান্ট স্ফিক ইংলিশ ফফারলি! হাউ হ্যাথেটিক!
চন্দন কোনোরকমে হাসি চেপেছিলভাগ্যিস, ওই সময় ক্ষেতু বাগচী এসে পৌঁছন নি
শেষ, বাচ্চা রুগীটির মা একটু খুঁতখুঁতে চন্দন লিখেছিল ফোটান জল দিয়ে ওষুধটা, শিশির মধ্যেই সিরাপ তৈরি করে নিতে। বাচ্চাটির মা ওষুধ কিনে নিয়ে এসে বললেন- আচ্ছা ডাক্তার বাবু, আমি ডিসটিলড্ ওয়াটার দিয়ে সিরাপটা তৈরি করতে পারি না?
 
চন্দন হেসে বলল- ডিসটিলড্ ওয়াটার তো ব্যাটারিতে ঢালে! আপনি ওষুধে ঢালবেন?
বাচ্চাটির মা
ও তাই তো! বলে, মাথা নেড়ে চলে গেলেন।

সত্য কম্পু বললেন- গুড কাজ ডান !

কি করবো বলুন? পেসেন্টরা এত আজগুবি কথা বলে!- চন্দন উত্তর দিল।

বল হরির চায়ে চন্দন এক চুমুক দিতে না দিতেই, কবি বদরী সান্যালের হাসি হাসি মুখে প্রবেশ।


 টুডে কেন, ইস্মাইলিং মুখ
? - সত্য কম্পু জিজ্ঞেস করলেন!


নাগেরবাজার- হাওড়া রুটের, একটা নতুন মিনিবাসের বডির পেছনে, দু লাইনের কবিতা লেখার অনুরোধ পেয়েছি! বদরী বাবুর উত্তর!
ওয়ান্ডারফুল! বলে ক্ষেতু বাগচীর প্রবেশ।
-                      তা লিখেছেন? চন্দন বলল।
-                      হেঁ! হেঁ! লিখে এনেছি শোনাতে! শুনবেন?
-                      আরে শোনাও, শোনাও! তারক মোত্তিরও বলতে বলতে ঢুকলেন!
-                      তালে, শোনাই? বদরী লজ্জিত মুখে বললেন!
-                      হুম ! শোনাও না! ভ্যানতাড়া করছ কেন হে! ক্ষেতু বাগচী ক্ষেপচুরিয়াস!



বদরী শুরু করলেন:-
এক ফুল, দো মালী
শ্যামবাজার লোড, হাওড়া খালি!
-বেড়ে! বেড়ে! হাততালি দিয়ে উঠল সবাই!
শুধু ক্ষেতু বাগচী বললেন- এক ফুল, দো মালী, এই লাইনটা কেন?
ওই মিনিটা, জামাইবাবু আর তারা শালা মিলে কিনেছে! তাই ফুল হলো মিনি আর মালী হল- দুজন! সিম্পল! বদরী বাবুর উত্তর।
না:! বদরী আজকাল বেশ লিখছে, এটা মানতেই হবে। ক্ষেতু বাগচী আজ বেশ উদার!
-আচ্ছা! এখানে ব্লু ড টেস হয়?
বলে এক ভদ্রলোক ঢুকলেন। বেশ ধোপদুরস্ত পাজামা- পাঞ্জাবী শোভিত।
-ব্লু ড? চন্দন একটু ভুরু কুঁচকে ভদ্রলোকের দিকে তাকাল।
- হুম! ব্লু ড!
- ম্যাটারটা কি! কি  করাতে চান আফনি? সেটা টেল ! সত্য কম্পু বললেন।
- আরে মশাই ডাক্তারের চেম্বারের আপনারা !!!! ব্লু ড টেস জানেন না?
- এটা কি ইংরেজি শব্দ? তারক মোত্তির জিজ্ঞেস করলেন।
- হাজার বার ইংরেজি শব্দ। মেডাইসিন টের্মও বটে।
- একি রে বাবা! ব্লু ড ইংরেজি শব্দ আবার মেডাইসিন টের্ম? চন্দন অবাক।
- মনে হয়, একটু একটু বুঝতে পারছি। আচ্ছা! আপনি ইংরেজি বানানটা বলুন তো!তারক মোত্তির বললেন।
- বি, এল, ও, ও, ডি! এইবার বুইলেন?
- ও ও ও !!!!!! ব্লাআআড! এত বছর মাস্টারি করেছি, মাইরি! বাপের জন্মে এরকম উরুশ্চারণ শুনি নি! তারক মোত্তির চেঁচালেন।
- অ অ ! তা কত বছর মাস্টারি কইরেচেন? ভদ্রলোকের ভুরু কুঁচকে গেল !!!
- পঁয়ত্রিশ বছর!
- কত মাইনে পাইতেন, একটু বইলবেন? কিছু মনে কইরবেন না!
- শেষের দিকে মাসে কুড়ি হাজার টাকা পেতাম। বুঝলেন! কুড়ি হাজার টাকাআআ! নট এ ম্যাটার অফ জোক! তারক মোত্তির ক্রোধান্বিত।
- ছোঃ! আপনার মাস্টারি রাখুন মহায়! এই উরুশ্চারণ নিয়ে আমি এখনও মাস গেলে চল্লিশ হাজার টাকা রুজগার করি! বুইলেন! উরুশ্চারণ শেখাচ্ছেন আমায়! হুঃ!
- কি করেন আপনি? ক্ষেতু বাগচী এতক্ষণে মুখ খুললেন।
- আমি উকিল!
- নাম?
- আমাকে ভালো নামে কেউ চেনে না।
- ভালো নামে আবার উকিলদের কে চেনে ? খারাপ নামটাই বলুন না।
- আরে ধ্যুস!  আপনি কিন্তু রেজিয়াল কমেন্ট করছেন !!! খারাপ নাম হবে কেন?
- রেজিয়াল !!!! ও ! রেসিয়াল  !! না রেসিয়াল কমেন্ট করবো কেন ? মানে, উকিলদের তো খুব একটা সুনাম থাকে না! তাই বলছিলাম আর কি!
 - হেঁ হেঁ! খুব নামডাক আমার! বুইলেন? আম্মো ভোলা সরকার। খাঁটি বারিন্দির!
- বুয়েচি! বারিন্দির ছাড়া এরকম বর্ডারলাইন কেস হয় নাকি? ক্ষেতু বাগচী উবাচ!
- মানে?
- মানেটা কিছুই নয়! বারিন্দিররা জাত পাগল! তা আপনি একটু বর্ডারলাইন কেস! ওই আপনার উরুশ্চারণের জন্য। বলছিলাম, টেস মানে তাহলে টেস্ট আর মেডাইসিন টার্ম মানে মেডিক্যাল র্টাম! তাই তো?
ভোলা সরকার মনে হলো, এবার একটু সতর্ক! সেটা বোধহয়, ক্ষেতু বাগচীর ছ ফুটি চেহারা আর বাজখাঁই গলা শুনে!
তা হলে, ইউ আসুন টু মোরও সকাল! সত্য- কম্পু বললেন।
এবার আসরে নামল, চন্দন!
-                      আপনার ব্লাড টেস্ট না হয় করা যাবে! সেটা কিসের জন্য, বলবেন?
-                      আর বলবেন না মহায়! আমার চোখ আর জিভ নাকি খারাপ!
-                      ডাক্তার দেখিয়েছেন?
-                      হ্যাঁ!
-                      চোখের ডাক্তার?
-                      না! আমার বৌ বলেছে!
-                      সে কি! আপনার বৌ কি ডাক্তার নাকি!
-                      না! তবে উনি মনে করেন, ডাক্তারি উনি জানেন! উনি সবজান্তা!
-                      তা কিজন্য ওনার মনে হলো,যে আপনার চোখ খারাপ?
-                       মহায়! আজকাল, আমি ভাতকে ভাত দেখি, ময়দাকে ময়দা দেখি, লুচিকে লুচি, মাছের ঝোলকে মাছের ঝোল!
-                      তালে? গণ্ডগোলটা কোথায়?
-                      ওটা বুঝলেই তো এই বর্ডারলাইন কেসটা সারে!
-                      মানে?
-                      কোনো খাবারের টেস পাচ্ছি না আজকাল! তাই বৌকে বলেছিলাম, তুমি কি রানচো দেখি আজকাল! কোনো কিছুই বুইতে পারছি না!
তা বৌ বলল- কেন? এই তো যা রোজকার খাবার! তাই তো দিচ্চি তোমায়!
আমি বইল্লাম! এডা তো ভাত দেকচি! কিন্তু ভাতের টেস পাচ্চি না!
বৌ বল্লে:- কিসের টেস পাছো?
আমি উত্তর দিলাম:- কেমন গোবোর গোবোর টেস! অতচ, ভাতই তো দেখচি!
বৌ রেগে গিয়ে বল্লে:- সব ঠিক দেকচো কি ? তোমার চোখ আর জিভ খারাপ হয়েসে। চোখ আর জিভ পরীক্ষার আগে ব্লু ড টেস করে নেবে, তারপর ডাক্তার দেকাবে।
ব্যাস! হয়ে গেল! তাই তো আমি একাজে এয়ে-চি!!!!!!!
আপনি বৌয়ের কথা খুব মান্য করেন দেখছি ! চন্দন বলল !
শুধু মাত্র বিবাহিত পুরুষদের জন্য স্বর্ণাক্ষরে লিখিত নিয়মমেনে চললে, কোনো দুক্কু থাকবে না ! ভোলা সরকার বললেন ।
কি রকম ?

নিয়ম- ১ স্ত্রীরা সবসময়ই ঠিক বলে ।
নিয়ম- ২ এর অন্যথা হলে, নিজের দুইগালে নিজেই থাপ্পর মারবেন
নিয়ম- ৩ তার পর, নিয়ম-১ পালন করুন ভোলা সরকারের জবাব ।
ক্ষেতুদা বললেন:- হুম! বুঝলাম। কিন্তু আপনি তো দেখছি, বাগবাজারী ভাষায় কথা বলছেন! এটা তো বারিন্দিরদের ভাষা নয়!
ঠিক! ঠিক! ভোলা বাবুর উত্তর! আমার বৌ, বুইলেন কিনা, ওই বাগবাজারের লোক! ওরাও বারিন্দির, তবে কেষনগর থেকে বাগবাজারে এয়েচেল। সেই থেকে তার অব্যেস! তাই আমারও হয়ে গেচে।
এ তো দেখছি, বদরীর এক ফুল দো মালীর কেস! একজন লোক, তার মুখে আবার দুরকমের ভাষা! হরি হে! তুমিই সত্য!!!!!! ক্ষেতু বাগচী দীর্ঘনিঃশ্বাস ছেড়ে বললেন। নাম শুনে, বল হরি একবার উঁকি দিয়ে গেল।
-                      বদরী সান্যাল বেশ খুশী হয়ে বললেন:- ক্ষেতুদা! চিকেন রোল খাবেন?
-                      তুমি খাওয়াবে?
-                      হ্যাঁ!
-                      আনাও, আর হ্যাঁ- এই ভোলাবাবুর জন্যও কিন্তু আনাবে! আমরা তো আছিই!
তা ভোলাবাবু, আপনি কেষনগরে বিয়ে করলেন কেন?
-                      আর বলবেন না! বাবা বলতেন:-

বাজার করবি ঘুরে ঘুরে
শ্বশুর করবি দূরে দূরে
মানেটা বুঝিয়ে বলবেন? ক্ষেতুদা বললেন।
-                      মানে হল গিয়ে, বাজার করতে হবে ঘুরে ঘুরে। তা হলে ওজন আর দাম ঠিক পাবেন! বুইলেন কিনা ! আর শ্বশুরবাড়ী দূরে করলে, মান – ইজ্জত পাওয়া যায় ! বুইলেন কিনা !
-                       শ্বশুরবাড়ীর কেস আর দামটা না হয় বুঝলাম, কিন্তু ওজন কেন?  পরিচিত দোকানদাররা ওজনে ঠকায় না!
-                      আর বলবেন না মহায়! আরও একটা কথা বলতেন বাবা!
-                      কি?
যার হাতে দাঁড়িপাল্লা
তার নেই খোদাতাল্লা!
-                      এর মানে?
-                      মানেটা সহজ! যার হাতে দাঁড়িপাল্লা আছে সে ঠকানোর জন্য ভগবানকেও ভয় পায় না। বুইলেন কিনা!
-                      এবার বুঝেছি! এই ক্যাচ লাইনটা একটু ঘুরিয়ে, আবার একটা খবরের কাগজের ইউএসপি কিনা ! যাক্ !!! আপনি উকিল তায় বারিন্দির! বলুন বলুন!
-                      কি আর বলবো মহায় ! আমি বাড়ীতে বাঘ , তবে!
-                      তবে?
-                      আমার বৌ রিং মাষ্টার !
হো হো করে হেসে উঠলো সবাই !
-                      তা ভোলা বাবু, আপনি কি গুল টুল মারেন ? ক্ষেতু বাগচী ছুঁড়ে দিলেন প্রশ্নটা ।
-                      উকিল মানুষ, বুইলেন ! সে তো মারতেই হয় ! উপার্জনের ব্যাপার ! বুইলেন কিনা !
-                      কি রকম ? দু- এক পিস স্যাম্পল ছাড়ুন !
-                      এ ব্যাপারে, আমার মায়ের বাবা, মানে দাদু ওস্তাদ ছিলেন ! বুইলেন কিনা !
-                      আচ্ছা?
-                      হ্যাঁ ! তবে আর বলছি কি ? বুইলেন কিনা ! একবার স্নানের সময় দিদিমার কাছে সরষের তেল চেয়েছিলুম । দাদু বললে- সে ছিল আমাদের সময় ! নদীতে যাওয়ার আগে, সরষের খেত থেকে সরষে তুলে, হাতে পিষে খাঁটি সরষের তেল গায়ে মেখে স্নান করতাম !
-                      আপনার দাদুর দুই হাত তো একেবারে ঘানির মত ছিল, বলুন !
-                      হ্যাঃ !  তা যা বইলেচেন ! এক্কেরে বামপন্থী থাবা !
তারক মোত্তির আর থাকতে পারলেন না ! ছড়া কাটলেন :-
রসকস নেই গন্ধ ছাড়ে
কুকুর  চিবোয় শুকনো হাড়ে
দুকষ বেয়ে  রক্ত ধার
বড়ই বাহার লেগেছে তার

-                      কি বইলেন ! আমি কুত্তা? ভোলা সরকারের গর্জ্জন
-                      আহা ! ব্যাপারটা ওই ভাবে নিচ্ছেন কেন ? ক্ষেতু বাগচী পরিত্রাতার ভূমিকায় !  পুরোন গপ্পো এভাবে বললে- বারিন্দিররা এই প্রবচন বলে !  আপনি বুদ্ধিমান লোক, মানেটা বুঝবেন, একটু ভাবলেই !
-                      অ !
-                      তবে, একবার লাউয়ের বিচি ফেলে ছিলাম , আমার কিচেন গার্ডেনে ! বিরাট লাউ হলো এক- একটা ! রিক্সা- ওয়ালা মধু বলল , আমাকে একখান দ্যান কত্তা ! দেশে নিয়ে যাব ! বনগাঁ লাইনের ঠাকুরপুকুরে ওর বাড়ী ! ই. এম. ইউ কোচের দরজা দিয়ে লাউটা তুলতে না পেরে , ফিরিয়ে নিয়ে এসেছিল মধু! তারপর, দিন তিনেক হাঁফিয়ে ছিল ! ক্ষেতু বাগচী, সিগারেটের ধোঁয়া ছেড়ে বললেন ।
-                      এ তো কিছুই না ! তারক মোত্তিরের প্রতিক্রিয়া !
-                      কিছু যেটা হলো, সেটা কি ? রেগে গেলে ,ক্ষেতু বাগচীর চোখ পিটপিট করে  ।
-                      এভরিটাইম, আফনে খচিতং !  এবারে সত্য কম্পু মুখ খুললেন । আরে, তারকদারে কইতে দ্যান !!!!
-                      বল হে তারক, ক্ষেতু বাগচী কেন যেন এবারে উদার !
-                      আমার বাবা, একবার বেখেয়ালে  করলার একটা ছোট গাছ লাগিয়েছিলেন কিছুদিন বাদে দেখলেন- ছয় বিঘা জমি জুড়ে, খালি করলার গাছ ! ট্রাকেক্কে ট্রাক করলা বেচে আমাদের বর্তমান তিনতলা বাড়ীটা বাবা বানিয়েছিলেন । হুঁ ! হুঁ ! বাওয়া, এক্কেরে নিয্যস সত্যি কথা !
-                      তোমার স্বাধীনতা সংগ্রামের মত, বাবা তারক ? ক্ষেতু বাগচী মুচকী হেসে বললেন ।
-                      কি রম্, কি রম‌্ ? ভোলা সরকার উৎসাহিত ।
-                      বাবা তারকনাথ স্বয়ং পেজেন ছিলেন গাঁধির সঙ্গে, গোলটেবিল বৈঠকে !
-                      হ্যাঁ ! ক্ষেতুদা ঠিকই বলেছেন । উনি তো হিটলারকে নিয়ে পালিয়েছিলেন, পরে রটিয়ে দ্যান, হিটলার আত্মহত্যা করেছেন !!!! অবশ্য আমাদের দাদার জন্ম- উনিস্সো পঁয়তাল্লিস সালে ।

এক মধ্যবয়স্ক  দারা সিংয়ের মত মহিলা এসে দাঁড়ালেন, চেম্বারের দরজায় !
-                      আসতে পারি ?
-                      আসুন, তবে পেসেন্ট দেখা বন্ধ এখন ! সত্য কম্পু বললেন ।
-                      আমি তো পেসেন্টের খোঁজেই এসেছি এখানে ! নিজেকে উকিল বলে পরিচয় দ্যায় । ওনার টপ ফ্লোরে একটু গণ্ডগোল আছে । উনি আসলে একটি হনুমান !  তা, লোকে বলল- একানে এয়েছেন ! তাই এলুম ।
ক্ষেতু বাগচী উঠে দাঁড়িয়ে বললেন – চলি হে চন্দন । তোমার বৌদি ঘন ঘন মিসড্ কল দিচ্ছেন । তারক মোত্তিরেরও একটা জরুরী কাজ মনে পড়ল।
লিটার লিটার ঘাম ঝরানো ভোলা সরকারকে বগলদাবা করে ভদ্রমহিলা  হাঁটা দিলেন

.........সমাপ্ত...............










রূপোলী রূপকথার রাজপুত্তুর


ম্যাট্রিক পাশ করে, কলকাতা বন্দরে কেরানির কাজ  আর একই সময় বেশী রোজগারের আশায় স্কুলের ছেলেমেয়েদের গান শেখানোর দায়িত্ব নিয়ে,কেজো জীবন শুরু হয়েছিল এই রাজপুত্তুরের ।
মেট্রো সিনেমাতে টর্চ লাইট নিয়ে “ আশারের” কাজ করতেন বাবা সাতকড়ি চট্টোপাধ্যায়
উত্তর কোলকাতার আহিরী টোলায় মামার বাড়িতে, ৩রা সেপ্টেম্বর ১৯২৬ এ জন্ম । বাবা নাম রেখেছিলেন অরুণ কুমার ।
জীবনের উত্থান পতন ছিলো তাঁর নিত্য সঙ্গীপাড়ার নাটকে অভিনয় করার সুবাদে পা রেখেছিলেন সিনেমার আঙিনায় । আজও মুক্তি পায় নি তাঁর প্রথম অভিনীত হিন্দী ছবি- মায়াডোর ।
১৯৩৯ সাল। দেশজুড়ে তখন এক অশান্ত অস্থির রাজনৈতিক অবস্থা। সেই উত্তপ্ত সময়ের মধ্যে কৈশোর পেরিয়ে যৌবন উত্তমের। একচল্লিশের ২২ শ্রাবণ। ১৫ বছরের অরুণ পায়ে পায়ে এসে দাঁড়াল রবীন্দ্রনাথের শেষ যাত্রায়, লক্ষ মানুষের মিছিল। পরের বছরই ভারত ছাড়োআন্দোলনের উন্মাদনায় ভবানীপুরের অলিগলিতে বের হতো অরুণের নেতৃত্বে স্বদেশি প্রভাতফেরি। অরুণেরই লেখা গান তারই সুরে গাওয়া হতো। সে বছরই ম্যাট্রিক পরীক্ষা এবং পাস। ম্যাট্রিক পাস করেছিলেন কলকাতার সাউথ সুবাবরণ মেইন স্কুল থেকে। ভর্তি হন গভর্নমেন্ট কমার্শিয়াল কলেজে। এখানে পড়েন কমার্স নিয়ে। ১৯৪২ সালেই নিদান ব্যানার্জির কাছে সঙ্গীতের তালিম নেন। ১৯৪৪ সালে পৌর কমিশনারস অফিসে খিদিরপুর ডকে ক্যাশিয়ারের চাকরি পান,  ২ হাজার টাকা সিকিউরিটি ডিপোজিট হিসেবে জমা দিয়ে।
১৯৪৭ সালে প্রথম ভারত লক্ষ্মী স্টুডিওর ফ্লোরে আসেন উত্তম কুমার। প্রথম অভিনীত ছবি মায়াডোর’ (হিন্দি)
এ ছবিতে কাজ করে দৈনিক পাঁচ সিকি পেতেন। নায়ক হিসেবে প্রথম অভিনয় কামনাছবিতে (১৯৪৯)নায়িকা ছিলেন ছবি রায়।কামনামুক্তি পাওয়ার পর এটি ফ্লপ করল।  সেই লড়াইটা ছিল ভয়ঙ্কর। ফ্লপ এবং ফ্লপ। হাত থেকে কনট্রাক্টের কাগজ ছিনিয়ে নিয়েছেন প্রযোজক। মুখের ওপর বলে দিয়েছেন, ‘কিছু মনে করবেন না, আপনার চেহারাটা নায়কোচিত নয় তুলনাটা চলে আসত প্রমথেশ চন্দ্র বড়ুয়ার সঙ্গে। দ্বিতীয় প্রতিপক্ষও তখন নেপথ্যে দাঁড়িয়ে সেই দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়।তাঁর মাচো-হিম্যানইমেজে গত শতাব্দীর পঞ্চাশোর্ধ বাঙালিরা তখনও আত্মহারা। হৃদয়ের কুঠুরিতে লেখা হয়ে গেছেদুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়কিংবা প্রমথেশ চন্দ্র বড়ুয়াএই দুই নাম। তাদের পাশে নবাগত অরুণ কুমার।  নাম পালটে হলেন উত্তমকুমার । ভাগ্যিস বসু পরিবার (১৯৫২) বক্স অফিসের মুখ দেখেছিল।
উত্তম কুমার বিয়ে করেন ১৯৫০ সালের ১ জুন পদ্ম পুকুরের বাসিন্দা গৌরী দেবীকে। একমাত্র ছেলে গৌতমের জন্ম ১৯৫১ সালে। এই সংগ্রামের সময় গৌরী দেবী, উত্তমকুমারকে সব সময় সাহস যোগাতেন ।
কলকাতার ভবানীপুর এলাকায় থাকতেন উত্তম কুমার। কাছাকাছি পাড়ায় সেকালের রূপবান নায়ক ধীরাজ ভট্টাচার্য, পুরনো ভানু বন্দ্যোপাধ্যায়, চরিত্রাভিনেতা ইন্দু মুখার্জি বসবাস করতেন। তাদের কাজ দেখে শিখেছেন উত্তম কুমার। আর তার সঙ্গে অবচেতন মনে ছিল দুর্গাদাস বন্দ্যোপাধ্যায়, প্রমথেশ বড়ুয়া, ছবি বিশ্বাস, জ্যোতি প্রকাশ, অসিত বরণ ও রবীন মজুমদারের মতো রোমান্টিক সব নায়কের রূপালি পর্দায় দেখার অদৃশ্য শিহরণ।
অবশেষে  ১৯৫৩ তে এলো- ৭৪৷৷০ ( সাড়ে চুয়াত্তর) ১৯৫৪ তে অগ্নিপরীক্ষা । দুটোতেই নায়িকা সুচিত্রা সেন ।
ব্যাস্ ! পেছনে পড়ে রইলো দৃষ্টিদান (১৯৪৮), কামনা (১৯৪৯), মর্যাদা (১৯৫০), ওরে যাত্রী (১৯৫১), নষ্ট নীড় (১৯৫১), সঞ্জীবনী (১৯৫২)- এদের মত সব ফ্লপ ছবি ।
তখন প্রত্যেক মেয়েই চাইতো উত্তমকুমারের মত প্রেমিককে । উডু উডু অ্যালবাট চুল, বঙ্কিম গ্রীবা, হৃদয় তোলপাড় করা হাসি আর অভিনয়ের চূড়ান্ত আধুনিকতা এগুলোই  ছিল উত্তমের তুরুপের তাসসব মেয়ে ফিদা ।
মাত্র ৫৪ বছরেই নিভে গেল (২৪ জুলাই ১৯৮০, বৃহস্পতিবার রাত ৯-৩০ মিনিটে কলকাতার বেলভিউ ক্লিনিকে) এই মহানায়কের জীবন সলতে । একদিক দিয়ে ভালই হয়েছে ।
বৃদ্ধ উত্তমকে ভাবাই যায় না । ভাবতেই পারি না ।

ভুলভাল

গুরুচণ্ডা৯ তে প্রকাশিত



কথাটা, মামলেট না ওমলেট? এই নিয়ে খুব মুশকিল!মামলেট বললে, লোকেরা বাঙ্গাল বলে খ্যাপায়! মামলেট কথাটা চিরকাল বলে এসেছি বা শুনে এসেছিকি বলি তালে? মুশকিল আসান বুকী ঘোষ বলল- সিম্পল! এই কথাটা আমাকে বলেন নি, ঘনাদা! আরে,আদতে পোলট্রির ডিম তো বিদেশী , তাই বিদেশী ডিম হলে ওমলেট আর দিশি হলে মামলেট! খেল খতম! খেলার কথাতে মনে পড়ল,আই. পি. এলের খেলা চলছে এখন! ডট বল! নো বল! ক্যারম বল! ( ক্যারম খেলাও ঢুকে গেছে, সাধে কি আর টেনিদার চ্যালা, প্যালা বলেছিল- ক্রিকেট মানে ঝিঁ ঝিঁ খেলা!!!!!!)কত কিছু নতুন শব্দ!!!! জানলাম, ডট বল ডট পেন নয়যে বলে রান হয় না, সেটাকেই নাকি ডট বল বলে! আর নো বল মানে বল নেই নয়। ( আমি এতদিন এটাই জানতাম) নো বল মানে, বল করার সময় ওই একটা বোলারস লাইন থাকে, সেটা যদি বোলারের পা পেরিয়ে যায়, তা হলে নো বল।( যাঁরা ক্রিকেট খেলা বোঝেন, এই অর্বাচীনকে ক্ষমা করবেন)
জানেন তো! পাড়ায় পাড়ায় আজকাল মন্দির গজায়! তা, আমাদের প্রিয় ক্রিকেটারেরও একটা চাটাই ঘেরা টেম্পোরারী মন্দির গজিয়ে উঠলদেবতারা নানা পোজে মন্দিরে দাঁড়িয়ে থাকেনকেউ খাঁড়া হাতে, কেউ গদা হাতে....ইত্যাদিএখানেও আমাদের প্রিয় ক্রিকেটার ব্যাট হাতে দাঁড়িয়েযে কেউ বল হাতে পুজো দিতে পারেপুরোহিতের পারমিশন নিয়ে প্রিয় ক্রিকেটার দেবতাকে বল করতে হবেদর্শনার্থী, বল করার পর, প্রিয় ক্রিকেটার যদি-বাপী, বাড়ী যা বলেন মানে ছক্কা মারেন, তো দর্শনার্থীর দিন, খুব খুব ভালো যাবেযদি চার মারেন, তো দর্শনার্থীর দিন, ভালো যাবেসিঙ্গল বা ডাবল নিলে দিন মোটামুটি যাবেডট বলে হলে ৫০-৫০ 
এক ক্রিকেট প্রিয় ভদ্রলোক সুতানুটি ডে রাইডারস এর জন্য গেলেন পূজো দিতেসুতানুটি ডে রাইডারসপরপর কয়েকটা খেলাতে হেরে প্রায় যায় যায়পুরোহিত, মন্ত্র পড়ে বল তুলে দিলেন ভদ্রলোকের হাতে ভদ্রলোক দৌড়ে এসে বল করলেন প্রিয় ক্রিকেটার দেবতাকে
বোল্ড!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!!, মানে কাঠি গুলো সব ছিটকে গেল, বেল সহ ( এ বেল, সে বেল নয়)তিনটে কাঠি মিলে উইকেট! কি উইকেড ব্যাপার!!!!!!!

পুরোহিত বললেন- সর্বনাশ! এরকম তো হয় না

ভদ্রলোক- কি হবে?
পুরোহিত- দাঁড়ান, বল শুদ্ধ করতে হবেদিন হাজার টাকা দিন!
অগত্যা মধুসূদন! কড়কড়ে দশটা একশ টাকার নোট বের করে দিলেন ভদ্রলোক!
পুরোহিত মন্ত্র পড়ে বল শুদ্ধ করে বললেন- ওঁ নো বলায় নমঃবল শুদ্ধ হয়ে গেল, আর আউটের দোষ কেটে গেলফ্রি হিট! ভদ্রলোক মনের আনন্দে বল করলেন আবার! এবার কিন্তু -বাপী, বাড়ী যা ভদ্রলোক মনের আনন্দে ছপ্পর উপর কৌয়া নাচে, নাচে বগুলা, আরে রামাহো গাইতে গাইতে মাঠে খেলা দেখতে গেলেনতখন কি তিনি আর জানতেন, পুরোহিতের বাড়ীতে আয়কর হানা হবে????????
বলতেই ভুলে গেছি, ভদ্রলোক টেনিদা ভক্ত
হলে কি হবে!!! ঘোর কলিকাল! পুরোহিতের প্রতিকার কাজেই লাগল নাপুস্করে স্নান করেও কলিকালে চন্দ্র গ্রহণ হচ্ছেশুধু গেলাম আর এলাম আর ফেলআমাদের গর্ব টেনিদাই যা খেললসুতানুটি ডে রাইডারস হেরে ভূত! সবার মুখে শ্লোগান- খেলব, ক্যাচ ফেলব, হারবো রে! ললিত বাণী আর পাওয়ারের শক্তি প্রদর্শন এখন গোল্লায়




আসছে বছর আবার হবে বলে ভদ্রলোক হাজারীবাগে ফিরে গেলেনগত তিন বছরে ওই বিদেশি ওমলেট আর দেশী মামলেট মিলেমিশে একাকার হতে পারল নাআসছে বছর আবার হবে, হবেই হবে তা বছর তো এসেই গেল!!! আদৌ হবে কি?