প্রফেসর পাড়ায়, সদ্য এক বছরের বিবাহিত জীবন তখন ।
সকালে উঠতে দেরী হয়েছিল সেদিন ।
সকালে উঠেই অভ্যাসমত, আমার বুশ
ট্র্যানজিসটর রেডিও অন করলাম, খবর শোনার জন্য ।
সব জায়গায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবরের হত্যার খবর ।
ঠিক বিশ্বাস হলো না । পাশেই থাকতেন, কটক
আকাশবাণীর সংবাদ পাঠক দেবেন্দ্র বাবু ( পদবী ভুলে গেছি ) ।
দৌড়লাম ওনার বাড়ী । উনি নেই---------- আকাশবাণী গাড়ী পাঠিয়ে
ওনাকে নিয়ে গেছেন রেডিও ষ্টেশনে ।
রিক্সা নিয়ে এলাম রেডিও ষ্টেশনে । কঠোর নিরাপত্তা তখন
সেখানে । বন্ধু বান্ধব থাকাতে ঢুকতে পারলাম ।
ডিউটি অফিসার তখন একজন বাঙালি ।
বিষণ্ণ মুখে স্বীকার করলেন সংবাদের সত্যতা ।
ফিরে এসে ঢাকা রেডিও খুললাম । তখন সেখানে চলছে, আনুগত্য স্বীকার নানা জনের ।
========
সেই বিষণ্ণতা আজও কাটে নি ।
===========
রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের ( সংক্ষেপে –RAW) প্রতিষ্ঠা ১৯৬৮ সালে ।
===========
রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের ( সংক্ষেপে –RAW) প্রতিষ্ঠা ১৯৬৮ সালে ।
চিন – ভারত যুদ্ধের পর ১৯৬২ থেকে ৬৮ এই
ছয় বছর লেগেছিল রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইংয়ের প্রস্তুতি পর্ব মেটাতে।
শোনা কথা- এদেরকে রুথলেস র, বলা হতো
এবং হয় । যতদূর মনে পড়ে, শ্রদ্ধেয় গৌরকিশোর ঘোষের লেখায়
পড়েছিলাম ।
ভারতীয় সংসদের কাছে রিসার্চ অ্যান্ড অ্যানালাইসিস উইং দায়
বদ্ধ নয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের কাছে দায়বদ্ধ ।
২৮/২৯ শে জুলাই- ১৯৭৫ য়ে তখনকার ভারতের প্রধান মন্ত্রী
শ্রীমতী ইন্দিরা গাঁধির কাছে – র আগাম খবর দিয়েছিল মুজিবর হত্যার
ব্যাপারে ।
সেই মত ঢাকায় থাকা ওই সময়ের ভারতীয় রাষ্ট্রদূত শ্রী সমর সেন
– মুজিবর সাহেবকে সাবধানও করেন ।
মুজিবর সাহেব বিশ্বাস করেন নি সে কথা । তাঁর ধারণা ছিল, সহযোগী খোন্দকার মুস্তাক আহমেদ- এই ষড়যন্ত্রের অংশীদার হতেই পারেন না ।
এছাড়া----- তাঁর অটুট বিশ্বাস ছিল, সেনা
বাহিনীর প্রতি ।
================================
“শেখ
মুজিবুর রহমান ১৯৭২ সালে বিবিসির পক্ষে ডেভিড ফ্রস্টের নেয়া বহুল আলোচিত ঐতিহাসিক
এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন,“আমার সবচেয়ে বড় শক্তি হলো আমার
জনগণ । কারণ আমি জনগণকে ভালোবাসি।আর আমার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা এটাই যে আমি তাদের
খুব বেশি ভালোবাসি” ।
সেই অতল ভালোবাসার সাথে ছিল এক অবুঝ আস্থা।তিনি ভাবতেই
পারতেন না যে কেউ তার সাথে কখনো বিশ্বাস ঘাতকতা করতে পারে।
বঙ্গবন্ধু তার প্রাণপ্রিয় বাঙালিকে এতটাই বিশ্বাস করতেন যে
তিনি নিজের বা পরিবারের জন্য নিরাপত্তা বলয় তৈরীর কোন তাগিদ কখনো অনুভব করেননি।“কোন বাঙালি আমারে মারবে এডা আমি বিশ্বাস করিনা।
“এমন কথা
বলেই জাতির জনক প্রায় ৬ মাস খেকে সর্বাঙ্গীণভাবে প্রস্তুত থাকা নিরাপত্তার চাদরে
মোড়া নবনির্মিত সরকারী বাসস্থান “গণভবনে” গেলেননা।
হিমালয়ের মত ভারি একটা মৃত্যুর বেদনা প্রাণপ্রিয় বাঙালিকে উপহার না দিলেও বোধ হয়
পারতেন জাতির জনক ! অথচ তিনি জানতেন যে, একটা বিষের তীর তাঁকে তাড়া
করছে।কিউবার বিপ্লবী জননায়ক ফিদেল ক্যাস্ট্রো তাঁকে হুশিয়ার করেছিলেন । ( ঋণ :-
শামসুল আরফিন খান)
==================================
ইন্দিরা উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েন । ১৪ ই অগাষ্ট সমর সেনের সাথে হট
লাইনে কথাও বলেন তিনি।
সেই মত কৌশল ঠিকও করা হয় । সেই কৌশল জানতে পেরে যায়
অ্যামেরিকা সহ কিছু দেশ, যাঁরা পাকিস্তানের সমর্থক ছিলেন ।
তারপর সেই নৃশংস হত্যা ।
( আরও লেখার
ছিল, তবে সূত্র নেই বলে লিখলাম না । )
No comments:
Post a Comment