Friday, January 8, 2010

“স্পুনারিজম”“

Ends well, that all well” এই উক্তিটি মনে পড়ছে? বা চেনা চেনা ঠেকছে কি? যাঁরা শ্রীসত্যজিৎ রায় রচিত “কৈলাসে কেলেঙ্কারী” পড়েছেন বা তাঁর সুযোগ্য পুত্র শ্রীসন্দীপ রায় পরিচালিত চলচিত্রটি দেখেছেন, তাঁদের ঝট্ করে মনে পড়ে যাবে।বইটি বা চলচিত্রটির শেষে জটায়ু ওরফে লালমোহন গাঙ্গুলি এই বাক্যবন্ধটি ব্যাবহার করেছিলেন।এখন প্রশ্ন হচ্ছে শ্রীসত্যজিৎ রায় এই বাক্যবন্ধটি কেন জটায়ু ওরফে লালমোহন গাঙ্গুলির মুখে এই বাক্যবন্ধটি বসিয়েছিলেন বা ব্যাবহার করেছিলেন? এমনি এমনি? সবিনয়ে বলি; না! হিউমারের জন্য বসালেও এই বাক্যবন্ধটির উৎপত্তি “স্পুনারিজম” থেকে। শ্রীসত্যজিৎ রায়ের পড়াশোনা ছিল অগাধ। বাঙ্গালী পাঠকদের “স্পুনারিজম” সম্বন্ধে একটু ধারণা দিতে এই কথাগুলি জটায়ু ওরফে লালমোহন গাঙ্গুলির মুখে বসিয়েছিলেন। জটায়ু আরও একটি গল্পে ঘাবড়ে গিয়ে “হ্যাঁয়েস” বলেছিলেন। “হ্যাঁয়েস” = হ্যাঁ+ Yes। এটিও “স্পুনারিজম” এর অন্যতম উদাহরণ। তা, এরকম ভাষা কি সত্যি সত্যি কেউ ব্যাবহার করতেন! করতেন! এবং তাঁর ব্যবহৃত বাক্যবন্ধ গুলি এখন “স্পুনারিজম” নামে বিখ্যাত! নিউ কলেজ, অক্সফোর্ডের, রেভারেণ্ড উলিয়াম আর্চিবল্ড স্পুনার (২২ শে জুলাই,১৮৪৪-২৯ শে আগস্ট,১৯৩০) এইরকম শব্দ ব্যাবহার করতেন! তাঁর এই বিখ্যাত দোষের(?) জন্য “স্পুনারিজম” শব্দটি ইংরেজি ভাষার অভিধানে স্থান পেয়েছে।বিদ্যাসাগরের মত খর্বকায়, মাথা বড় এবং গোলাপী মুখ, গায়ে শ্বেতী, সহৃদয় এই ভদ্রলোক অনেক ব্যাপারে সুপণ্ডিত ছিলেন।মূলত ভক্তিবাদ, দর্শন ও প্রাচীন ইতিহাস পড়াতেন রেভারেণ্ড উলিয়াম আর্চিবল্ড স্পুনার।
একবার তিনি তাঁর ছাত্রদের বললেন:- You have hissed all my mystery classes. So you must leave the campus by the town drain! ছাত্ররা হতবাক! পরে বোঝা গেল তিনি বলতে চেয়েছিলেন:- You have missed all my history classes. So you must leave the campus by the down train! ক্লাসে পড়াতে ঢুকে তিনি একবার দেখলেন একটি চিঠি পড়ে রয়েছে ডেস্কের ওপর। তিনি বললেন:- Who has speed the most? আসলে তিনি বলতে চেয়েছিলেন:- Who has missed the post? এরকম আরও মজার মজার কথা তিনি বলেছিলেন। পরে অবশ্য অনেক কথা যেগুলো তিনি বলেননি তাঁর মুখে বসিয়ে দেওয়া হয়।তাঁর আসল কতকগুলি কথার নমুনা:- Come and wook out of the lindow ( Come and look out of the window)Go and shake a tower( Go and take a shower)leed of spight(Speed of light), Minting Pristake (Printing Mistake)এরকম আরও অজস্র উদাহরণ আছে। মজার ব্যাপার হলো আমরাও কিন্তু অজান্তে এই “স্পুনারিজম” টা করি। যেমন:-“চারটে” ভাত, এক গ্লাস জল “দেখি”, “উইলটার ফিলস্” (ফিলটার উইলস্),বিনা খয়ের “দিয়ে” পান, ‘বাই’ ট্রেনে করে, ‘আপটু’ শেয়ালদা পর্যন্ত্য, । উৎসাহী পাঠকরা যদি আরও কিছু যোগ করতে পারেন, কৃতজ্ঞ থাকব।রেভারেণ্ড উইলিয়াম আর্চিবল্ড স্পুনারের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই প্রবন্ধটি শেষ করলাম।

1 comment:

Abhijit said...

আপনার মুখে চুলফন্দন পড়ুক...😊