সাত গাছির মোড়টা, অটো ওয়ালাদের দখলে যাবে—সেটা টোডরমল লিখে রেখে গেছিলেন, পরচাতে ।
আর সেই সুযোগে, ওদের সার সার অটো দাঁড়িয়ে থাকে, সরু নগেন্দ্র নাথ রোড জুড়ে।
যশোর রোডের মুখটাতে এসেই হয় মুশকিল । টোডরমলের কথা তো কেউ জানে না, তাই, অপশব্দ অহরহ বের হয় সব্বার মুখ থেকে ।
অটো ওয়ালারাও কোমর কষে ঝগড়া করে । নিত্য অশান্তি ।
তার ওপর বৃষ্টিতে, রাস্তায় জমা জল ছলাৎ ছলাৎ করে গায়ে এসে লাগে ।
প্রত্যেকের পোষাকেই তাই নামী দামী কোম্পানির কালার কম্বিনেশন !
চালু কথা, রং য়ের দোকানে গিয়ে আর কষ্ট করে কম্পুতে আর “ শেড” দেখতে হচ্ছে না কারও, ফ্ল্যাটের রুম গুলো রং করার জন্য ।
--
রতন নিয়ে চলেছে আমায়, আজ সন্ধেবেলায় নাগের বাজারে । ঠিক সাতগাছির মুখ থেকেই ডান দিকে “রিস্কার” হ্যাণ্ডেল ঘোরাতেই পেছন থেকে একটা গাড়ী চক্কাস্ করে ব্রেক করে দাঁড়ালো ।
গাড়ীর সারথি, মুখ বের করে গয়ারু শব্দ বলতেই রতন রুখে ফায়ার ।
- আফনে কি দক্ষিণেশ্বর থিকা আইসেন নি, যে আমারে গালি দেন ?
- যা, যা, আমি রামকৃষ্ণ নই যে ভক্তির কথা বলবো, বুজলি !
- কেডায় কয়, দক্ষিণেশ্বরে খালি রামকৃষ্ণ থাকেন ?
- সবাই জানে !
- ধুরোঃ ! কিস্যু জানে না । তয়, গাছের হনুমান গুলা কোত্থিকা আইলো?
- ক্ষী ! আমি হনুমান ?
- হনুমানও আফনের থিকা ভদ্র !
- আমি কারও কাছ থেকে কিছু কেড়ে খাই না ! তবে, মন্দিরে গেলেই সিঁড়িতে মাথা ঠুকি !
- হেই দ্যাহেন, আফনে একটা ছাগল !
- ক্ষী ?
- আরে মন্দিরেই যদি যাইবেন, তৈলে সিধা ঠাইরানের পায়ে মাথা ঠুকেন না ক্যা ? যত্ত সব আজাইরা কাম করেন !
- দ্যাখ, আমি ড্রাইভার ! সন্মান দিয়ে কথা বলবি
- হঃ ! আমিও ডেরাইভার, তয় তিন চাক্কার ।
- তোর মত প্যাডেল মেরে গাড়ী চালাই না
- কেডায় কয় ? আফনেও প্যাডেলে চাপ দ্যান, তবে শ্যান গাড়ী চলবো !
- তোদের মত অত শক্তি লাগে না
- লাগবো ক্যা ? খাইতে পারবেন ৪৪ টা রুটি ? একবার খাইছিলাম এই দাদার বাড়ী ( আমাকে দেখিয়ে) । তরকারী ফুরাই সিল, ৩০ খানা খাওনের পরে । বাকী ১৪ খান ঠাকুরের কুচি কলা আর নকুলদানা দিয়া চালান করসিলাম, প্যাডে । হঃ আমারে খাওয়া শেখায় !
============
আরও হয়তো চলতো, তবে সারসার গাড়ী, বাস, রিক্সা দাঁড়িয়ে গেছে । তাই সাউথ দমদম পুরসভার স্বেচ্ছা সেবকরা রতনের রিক্সার পেছনে আলতো করে লাঠির বাড়ি দিয়ে এগোনোর সিগন্যাল দিল ।
No comments:
Post a Comment