Friday, July 25, 2014

পাগলামি

কি জানেন ?  এখন তো আমার কোনো কাজ নেই, তাই ফেসবুকেই বসে ওকরা ফ্রাই করি ।

আর কি আশ্চর্য, প্রচুর পুরোনো বন্ধুদের দেখাও পাই !
কটক থেকে ভুবনেশ্বর পুরী, মালদা থেকে বালুরঘাট, শিলিগুড়ি সব জায়গায় ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছেন এই সব বন্ধুরা ।
লিখতে মন চায় সেই সব পুরোনো কথা ! অক্ষম হাতে সেগুলো লিখেই ফেলি  !

একবার বালুরঘাট থেকে মালদায় ফিরবো । লাষ্ট “ ক্যালকাটা” ( উত্তর বঙ্গে তখন সবাই ক্যালকাটাই বলত) বাস ।
আগেরটা এক ঘন্টা আগে ছেড়ে গেছে । ডাক্তার ভিজিট আর আড্ডাতে দেরীও হয়ে গিয়েছিল সেই দিন ।
পরের দিন ফিরতে পারতাম তবে আমার আর বিলুর ( আরেক বেচু বাবু) বস ( মানে ওপরওয়ালা) আসবে । তাই ফিরতেই হবে ।
ষ্ট্যাণ্ডে গিয়ে দেখা গেল, একটাও সিট নেই । সব বুকড্ । চেনা কনডাক্টারও নেই যে ম্যানেজ করবে । তিন ঘন্টাই দাঁড়িয়ে যেতে হবে । এটা সম্ভব ?
তখন মালদায় নামকরা মানসিক ডাক্তার জয়ন্ত বোস ( এখন শুনেছি সল্ট লেকে আছেন ) ।
আমার আর বুলির চোখা- চোখা চোখি হয়ে গেল । আমার আর বুলির ব্যাগটা বুলি ধরল ।
ঠেলাঠেলি করে উঠে পড়লাম ।
অনর্গল ভুলভাল বকে যাচ্ছি আর হা হা করে হেসেই যাচ্ছি অনর্থক ।
অন্য যাত্রীরা বিরক্ত হলেও কিছু বলছিলেন না !
কনডাক্টার বলল :- এই রোগীকে নিয়ে যাওয়া তো মুশকিল । কোথায় যাবেন আপনারা ?
আমি হারেরে করে তেড়ে গেলাম ওর দিকে । কনডাক্টর ভয় পেয়ে পেছনে সরে গেল ।
বুলি হাত জোড় করে বলে উঠল :- দেখতেই পারছেন, পাগল । মালদায় নিয়ে যাচ্ছি  ডাঃ জয়ন্ত বোসকে দ্যাখাতে । কালকেই দেখাতে হবে । ট্রাঙ্ক কল এসেছিল একটু আগে।  বসার জায়গা দিন না , প্লিজ! তাহলে বোধহয় ঠাণ্ডা হলেও হতে পারে ।

দয়া করে কনডাক্টার নিজের সীটে বসতে দিলেন আমায় । বুলি বলল :- আমাকেও ওর পাশে বসতে দিন, না হলে মুশকিল হতে পারে ।

সেকেণ্ড ড্রাইভার সিট ছেড়ে দিলেন । আমরা যথার্থ ভাড়াও দিলাম । 

সব চেক টেক হয়ে গেলে সেকেণ্ড ড্রাইভার আর কনডাক্টর- ড্রাই ভারের  পেছনে বসলেন ।

মালদা এলো । আমরাও নামলাম ।
আমি শান্ত মুখে কনডাক্টর সজলকে ( এটাই বোধহয় নাম ছিল )  অনেক ধন্যবাদ দিলাম ।
আপনি পাগল নন ?
ছিলাম, বসার জায়গা না পেয়ে---- তবে এখন আর নেই !
=====

এর পর থেকে ক্যালকাটা বাসে সব কনডাক্টারাই- আমাকে দেখলেই বসার জায়গাটা দিত, সে যতই ভীড় থাকুক না কেন !!




No comments: