নীদ আয়ি তো খোয়াব আয়ি
খোয়াব আয়ি তো তুম্ আয়ি
পর তুমহারী ইয়াদমেঁ
না নীদ আয়ী, না খোয়াব আয়ি, না তুম্ আয়ি!
অথবা
আ্যায় ঈশক্, জী ভর কে সতালেঁ মুঝকো
কাল মেরা ঈশক্ কা অন্দাজ বদল যায়েগা!
ইটালিয়ান ভাষায় “ অমের্তা” বলে একটা
কথা আছে। এই শব্দটার প্রায় কাছাকাছি অর্থ হলো- নীরবতার বিধি, Code of Silence। সবাই জেনেছিলেন, এই প্রেম- কাহিনী। কিন্তু, দেব সাহাব
ঠিক, এই “শায়েরী” গুলো
আউড়েছিলেন কিনা, সুরাইয়ার প্রতি, সেটা ওই “ অমের্তা”র মধ্যে পড়ে রয়েছে।
অমর প্রেম কহানিয়াঁ র মধ্যে আমরা জানি; লয়লা- মজনু, হীর- রণঝার কথা! সেগুলোর একটা ধারণা পাওয়া যাবে, দেবআনন্দ- সুরাইয়ার জুটির সত্যিকারের প্রেমের মধ্যে। সেলুলয়েডের পর্দায়, যেমন রোমান্টিক জুটি, বাস্তব জীবনেও এই জুটি ছিলেন-আদর্শ
প্রেমিক যুগল। “ হাম হ্যায় রাহী প্যার কি, হাম
কিসিকি হো লিয়ে।” বাদ সেধেছিলেন, সুরাইয়ার
মা! তাও, দেব সাহাব চেষ্টা করেছিলেন- “মানা
জনাবনে পুকারা নেহি” বলে, তবু দুজনের মধ্যে অলঙ্ঘ প্রাচীর
হয়ে দাঁড়িয়েছিল- ধর্ম। সুরাইয়া সারাজীবন রয়ে গেলেন- অনূঢ়া! ‘চির তরুণ’ অভিনেতা দেব আনন্দ রয়ে গেলেন, সুরাইয়ার “হৃদি-মাঝারে”। সেই হৃদরোগেই আক্রান্ত হয়ে চলে গেলেন, আমাদের দেব- সাহাব। দেবআনন্দ বিয়ে করেছিলেন, তাঁরই
নায়িকা কল্পনা কার্ত্তিককে। ৮৮ বছর বয়সে ০৩/১২/২০১১র রাতে লন্ডনের মে- ফেয়ার
হোটেলের এক কামরাতে, মৃত্যু হয় এই কিম্বদন্তি প্রেমিক অভিনেতার! চিকিৎসার
জন্য, ছেলে সুনীলকে নিয়ে গিয়েছিলেন তিনি! কে জানত, এটাই হবে তাঁর শেষ যাওয়া!!!!!!!!!!
ধর্মদেব পিশোরীমল আনন্দ, রয়ে গেলেন, অগণিত ভক্তের “হৃদি-মাঝারে”- দেবআনন্দ, দেবসাহাব হয়ে। প্রবাদপ্রতিম এই অভিনেতা একবার বলেছিলেন- আমার তৈরী ফিল্ম “হাম দোনো” র একটা গান, আমার জীবনের দর্শন হয়ে থেকে গেছে। “মেঁয় জিন্দেগী কা সাথ নিভাতা চলা গয়া”।
জাত খেলোয়াড়, প্রসঙ্গে ক্রিকেট লিখিয়েদের কাছে
শেক্সপিয়র হিসেবে বিবেচিত হওয়া নেভিল কার্ডাস লেখেছিলেন-, 'হাঁস যেমন
জলে নেমেই পারে সাঁতার কাটতে পারে, পাখি যেমন জন্মের পরই পারে আকাশে
উড়তে, জাত ক্রিকেটাররাও হলেন তাই। অভিজ্ঞতা কিংবা অন্য কোনো
কিছুরই দরকার পড়ে না তাদের। মাঠে নেমেই তারা পারেন চমকে দিতে।' জাত অভিনেতা নিয়ে কার্ডাস কিছু বলেছেন কি-না তা আমার জানা নেই। তবে, ১৯৪৬ সালে তাঁর প্রথম অভিনীত ছবি- “হাম এক হ্যাঁয়” জন্ম দিল পরবর্তী ছয় দশক ধরে চলা এক অসামান্য সাফল্যের খতিয়ান।
অবিভক্ত পাঞ্জাবের গুরুদাসপুরে ২৬ শে সেপ্টেম্বর ১৯২৩ সালে, বাবা পিশোরীমল আনন্দের মেজ ছেলে দেবের জন্ম। লাহোরের গর্ভমেন্ট ল কলেজ থেকে
ইংরাজী সাহিত্যের স্নাতক, দেব; চলে আসেন, তদানীন্তন বোম্বেতে। চাকরী খুঁজতে খুঁজতে পেয়ে গেলেন- চার্চগেটে মিলিটারী
সেন্সর দপ্তরে ১৬০ টাকা মাইনের চাকরী। মহাতারকা ভোল্টেজে আলোকিত অভিনয় জীবনের
শিখরেও, তিনি ভোলেন নি, এই চাকরীর
কথা। কারণ, এই ১৬০ টাকাই ছিল তাঁর বোম্বের জীবনে পাথেয়। বন্ধু
গুরু দত্ত্ র সঙ্গে থাকতেন তিনি। প্রতিজ্ঞা ছিল, একে অপরকে
সাহায্য করবেন, অভিনয় জীবনে। ‘এভারগ্রিন
রোমান্টিক সুপারস্টার’ হলেন- ১৯৪৭ এ মুক্তি পাওয়া ছবি- ‘জিদ্দি’ থেকে। এরপর তাঁকে আর কখনওই পিছনে তাকাতে হয়নি.
অভিনয়ের ক্ষেত্রে বহুমূখী প্রতিভার অধিকারী দেব আনন্দ এরপর
একের পর এক হিট সিনেমার মাধ্যমে দর্শকদের হৃদয় জয় করে নিয়েছেন.’পেয়িং গেস্ট’, ‘বাজি’, ‘জুয়েল থিফ’,’সিআইডি’, ‘জনি মেরা নাম’, ‘আমির গরিব’, ‘ওয়ারেন্ট’ ‘হরে রাম
হরে কৃষ্ণ’ এবং ‘দেশ পরদেশ’ –এর মতো
সিনেমার মাধ্যমে।
এই সব ছবি,আমোদিত করেছে সিনেমাপ্রেমীদের।ভারতীয় সিনেমার “গ্রেগরী পেকে”র অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০১-এ পদ্মভূষণ এবং ২০০২-এ দাদা সাহেব পুরস্কার দেওয়া হয় দেব আনন্দকে। ১৯৪৯-এ তিনি তাঁর নিজস্ব ফিল্ম প্রোডাকশন কোম্পানি ‘নবকেতন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্মস’ গড়ে তোলেন।এই কোম্পানি প্রায় ৩৫টি সিনেমার প্রযোজনা করে.
এই সব ছবি,আমোদিত করেছে সিনেমাপ্রেমীদের।ভারতীয় সিনেমার “গ্রেগরী পেকে”র অসামান্য অবদানের স্বীকৃতি হিসেবে ২০০১-এ পদ্মভূষণ এবং ২০০২-এ দাদা সাহেব পুরস্কার দেওয়া হয় দেব আনন্দকে। ১৯৪৯-এ তিনি তাঁর নিজস্ব ফিল্ম প্রোডাকশন কোম্পানি ‘নবকেতন ইন্টারন্যাশনাল ফিল্মস’ গড়ে তোলেন।এই কোম্পানি প্রায় ৩৫টি সিনেমার প্রযোজনা করে.
ভারতীয় চলচ্চিত্রের সর্বশ্রেষ্ঠ পুরস্কার ফিল্ম-ফেয়ার
অ্যাওয়ার্ড দুবার পেয়েছেন দেব আনন্দ. প্রথমবার কালা পানি ছবিতে অভিনয়ের জন্য,দ্বিতীয়বার ১৯৬৬-এ গাইড সিনেমার জন্য।গাইড সিনেমা ফিল্মফেয়ার অ্যাওয়ার্ডের
পাঁচটি বিভাগে সেরার শিরোপা জিতে নেয়। ওই বছরই বিদেশি ছবি হিসেবে অস্কার
পুরস্কারের জন্য পাঠানো হয় ওই ছবিটিকে। নোবেল বিজয়ী পার্ল এস বার্কের সঙ্গে দেব
আনন্দ যৌথভাবে প্রযোজনা করেন গাইডের ইংরেজি ভার্সান- দ্য গুড আর্থ। ১৯৯৩- দেব আনন্দ
ফিল্মফেয়ার লাইফটাইম অ্যাওয়ার্ড সম্মান পান।
হলিউড মানে যদি স্ট্রবেরি আর ক্রিম হয়, বলিউড বা হিন্দি ফিল্ম হলো দেবআনন্দের ইংলিশ হ্যাট আর স্যুট।
সালাম- দেবসাব!
No comments:
Post a Comment