Thursday, July 24, 2014

বজ্জাতি

আমি তো বটেই, আমার ক্লাসের সবাই বেধড়ক পিটুনি খেতাম স্যারেদের কাছে । পড়ার জন্য- যতটা নয়, বেশী মার পড়তো, বদমাইয়েসী করার জন্য ।
বেতের বাড়িটা পেছনে পড়ত সব সময়, কখনই বুকে পেটে নয় ।
বিজন স্যার, শশাঙ্ক স্যার, প্রিয়নাথ স্যার, হেমাঙ্গ স্যার সবাই মারতেন । হেডস্যার প্রবোধ মিত্র   তো বটেই ।
মারার ঠিক  আধঘন্টা পরেই ডেকে নিয়ে যেতেন টিচার্স রুমে । গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে, স্কুলের সামনে থেকে দশরথদাকে (দপ্তরী) দিয়ে আনিয়ে ঘুঘনি খাওয়াতেন ।

আগেই বলেছি- তাও বলি, আমাদের গায়েই লাগতো না মারটা । বরং শান্তির নেতৃত্বে আরও বেশী নষ্টামি করতাম ।
ওই ঘুঘনী খাওয়ার লোভ ।
কারও বই লুকিয়ে ফেলা, চটি এক পাটি ছুঁড়ে ফেলা, এগুলোই ছিল আমাদের মজার বিষয় ।
একবার, খোদ প্রিয়নাথ স্যারের সাধের চটিটা লুকিয়ে ফেলেছিলাম । ওটা দিয়েছিল, এক পুরোনো ছাত্র । বেশ দামী ।
অনেক বার বলেছিলেন – কে লুকাইছিস- ক, না কইলে পর হাড্ডিগুলান আস্ত রাখুম না ।
কেউ বলেনি । চোরের মার খেয়েছিলাম আমরা সাতজন, তাও বলিনি—শান্তি লুকিয়েছিল ।
শান্তির বাড়ী ছিল, প্রিয়নাথ স্যারের বাড়ীর কাছেই । মার খেয়ে স্যারের স্ত্রীকে বলে দিয়েছিল ও, সাথে চটিটাও ।
পরের দিন কাকীমা নিজে স্কুলে এসে , আমাদের সক্কলকে দু –প্লেট করে, নিজের হাতে তৈরি করা ঘুঘনি খাইয়েছিলেন ।
মিনতি করে বলেছিলেন :- লোকডার তো বয়স হইত্যাসে, মেজাজ ঠিহিই রাখতে পারে না ।
তোগোও কই----- তোরা এত বজ্জাত ক্যা ?
বড় হবি, তোরা, তারপর শ্যান বুজবি- কম টাকায় সংসার চালানোর লইগ্যা কি কষ্ট!
=========

আমরা আর অন্তত কারও জুতো বা চটি লুকোই নি, এখন এফএমে বাজছে- সেদিনের সোনাঝরা সন্ধ্যা



No comments: