আমি তো বটেই, আমার ক্লাসের সবাই
বেধড়ক পিটুনি খেতাম স্যারেদের কাছে । পড়ার জন্য- যতটা নয়, বেশী মার পড়তো,
বদমাইয়েসী করার জন্য ।
বেতের বাড়িটা পেছনে পড়ত সব সময়,
কখনই বুকে পেটে নয় ।
বিজন স্যার, শশাঙ্ক স্যার,
প্রিয়নাথ স্যার, হেমাঙ্গ স্যার সবাই মারতেন । হেডস্যার প্রবোধ মিত্র তো বটেই ।
মারার ঠিক আধঘন্টা পরেই ডেকে নিয়ে যেতেন টিচার্স রুমে ।
গায়ে মাথায় হাত বুলিয়ে, স্কুলের সামনে থেকে দশরথদাকে (দপ্তরী) দিয়ে আনিয়ে ঘুঘনি
খাওয়াতেন ।
আগেই বলেছি- তাও বলি, আমাদের গায়েই
লাগতো না মারটা । বরং শান্তির নেতৃত্বে আরও বেশী নষ্টামি করতাম ।
ওই ঘুঘনী খাওয়ার লোভ ।
কারও বই লুকিয়ে ফেলা, চটি এক পাটি
ছুঁড়ে ফেলা, এগুলোই ছিল আমাদের মজার বিষয় ।
একবার, খোদ প্রিয়নাথ স্যারের সাধের
চটিটা লুকিয়ে ফেলেছিলাম । ওটা দিয়েছিল, এক পুরোনো ছাত্র । বেশ দামী ।
অনেক বার বলেছিলেন – কে লুকাইছিস-
ক, না কইলে পর হাড্ডিগুলান আস্ত রাখুম না ।
কেউ বলেনি । চোরের মার খেয়েছিলাম
আমরা সাতজন, তাও বলিনি—শান্তি লুকিয়েছিল ।
শান্তির বাড়ী ছিল, প্রিয়নাথ
স্যারের বাড়ীর কাছেই । মার খেয়ে স্যারের স্ত্রীকে বলে দিয়েছিল ও, সাথে চটিটাও ।
পরের দিন কাকীমা নিজে স্কুলে এসে ,
আমাদের সক্কলকে দু –প্লেট করে, নিজের হাতে তৈরি করা ঘুঘনি খাইয়েছিলেন ।
মিনতি করে বলেছিলেন :- লোকডার তো
বয়স হইত্যাসে, মেজাজ ঠিহিই রাখতে পারে না ।
তোগোও কই----- তোরা এত বজ্জাত ক্যা
?
বড় হবি, তোরা, তারপর শ্যান বুজবি-
কম টাকায় সংসার চালানোর লইগ্যা কি কষ্ট!
=========
আমরা আর অন্তত কারও জুতো বা চটি লুকোই নি, এখন এফএমে বাজছে- সেদিনের সোনাঝরা সন্ধ্যা
আমরা আর অন্তত কারও জুতো বা চটি লুকোই নি, এখন এফএমে বাজছে- সেদিনের সোনাঝরা সন্ধ্যা
No comments:
Post a Comment