এই ছোট প্রবন্ধে আমি চেষ্টা করেছি, পুরীর রথ সম্বন্ধে কিছু তথ্য জানাতে। প্রথমেই আসা যাক, নব কলেবর প্রসঙ্গে। যে নিম গাছগুলি থেকে বিগ্রহগুলির নবকলেবর হবে; সেগুলির কতকগুলি বৈশিষ্ট্য থাকবে। ১) নিমগছের রং ঘন কালো হবে।
২) এই গাছের কাণ্ডের ব্যাস কম করে ১২ ফুট হবে।
৩) এক একটি গাছের ৪ টি প্রধান শাখা থাকবে।
৪) গাছগুলি কোন নদী বা পুকুরের পাশে থাকবে। গাছগুলিকে ৩টি রাস্তার সংযোগস্থলে খুঁজে পেতে হবে।
৫) গাছগুলি বরুণগাছ ও বেলগাছ দ্বারা পরিবৃত থাকবে।
৬) গাছগুলি ৩টি পাহাড় দ্বারা পরিবৃত থাকবে।
৭) নিমগাছের কাছেই কোন আশ্রম থাকবে।
৮) একটি শ্মশান ভূমিও থাকবে।
৯) ভগবান বিষ্ণুর ৪টি পবিত্র চিহ্ন – শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্মের ছাপ থাকবে গাছের কাণ্ডে।
১০) নিমগাছের কাছেই উইপোকার ঢিবি থাকবে।
১১) পাখীর কোন বাসা থাকবে না গাছে।
১২) নিমগাছের ওপর কোনদিন বাজ পড়া চলবে না। ঝড়ে, নিমগাছের কোন শাখা প্রশাখা ভাঙ্গা চলবে না।
১৩) নিমগাছের নীচে গোখরো সাপের বাসা থাকতে হবে।
১৪) নিমগাছের নীচে কোন ঝোপঝাড় থাকা চলবে না।
এই ১৪ টি বৈশিষ্ট্যের মধ্যে কম করে ৫ টি বৈশিষ্ট্য থাকলেই নবকলেবরের জন্য সেই নিমগাছ নির্বাচন করা হবে।
সরকারী রেকর্ডে ১৭৩৩ খ্রীষ্টাব্দ থেকে নবকলেবরের নথীভূক্তকরণ আছে। তারপর ১৮০৯,১৮২৮,১৮৫৫,১৮৭৪,১৮৯৩,১৯১২,১৯৩১,১৯৫০,১৯৬৯,১৯৭৭,১৯৯৬ পর্যন্ত আছে।
বলভদ্রের রথের নাম:- তালধ্বজ্ ।
সুভদ্রার রথের নাম:- দেবদলন।
জগন্নাথের রথের নাম:- নন্দিঘোষ।
রথগুলির বর্ণনা:-
তালধ্বজ্ (বলভদ্র/বলরাম) -
উচ্চতা- ১৩.২ মিটার।
কাঠের টুকরো-৭৬৩ টি।
ধ্বজার/পতাকার নাম- উন্মনী।
রথের কাপড়ের রং- লাল সবুজ।
চাকা-১৬ টি।
দেবদলন (সুভদ্রা) -
উচ্চতা-১২.৯ মিটার।
কাঠের টুকরো-৫৯৩টি।
ধ্বজার/পতাকার নাম- নাদম্বিক।
রথের কাপড়ের রং- লাল কালো।
চাকা-১৪ টি।
নন্দিঘোষ (জগন্নাথ) -
উচ্চতা- ১৩.৫ মিটার।
কাঠের টুকরো- ৮৩২ টি।
ধ্বজার/পতাকার নাম- ত্রৈলোক্যমোহিনী।
রথের কাপড়ের রং- লাল হলুদ।
চাকা-১৮ টি।
উৎস:- আমার পুরীতে সাধনরত অবস্থায় পুরীর পাণ্ডা বন্ধুদ্বয়; শ্রী বনবিহারী পতি ও শ্রীবিপিন পতি, পুরীর সরকারী গেজেট ও শারদীয় “বর্তমানে” প্রকাশিত শ্রী সুমন গুপ্তের প্রবন্ধ।
No comments:
Post a Comment