ভোরবেলাতেই ঘুম ভেঙে যায় আমার । আর বিছানায় ভালো লাগে না ।
আগে যেমন ঘুমের রেশ কাটতোই না, এখন সেটা একেবারেই অনুপস্থিত ।
হাফহাতা পাঞ্জাবী আর লুঙ্গি পরণে, পায়ে চপ্পল সেঁধিয়ে
বেরিয়ে পরি, হরির দোকানের উদ্দেশ্যে ।
গলির চারপাশের বাড়ী থেকে ভেসে আসে রান্নার সুবাস ।
পাঁচফোড়ন, হলুদ, সরষের তেল, পেঁয়াজ, রসুন- সব মিলিয়ে একটা ফিউশন ।
ভ্যানগাড়ীতে ভর্তি হয়ে চলেছে- শাক, সব্জী বিভিন্ন বাজারের
দিকে ।
ভাঙড় থেকে সাইকেল চালিয়ে পাতিপুকুর গিয়ে মাছ নিয়ে আসে ইয়ার
আর আসলাম।
গামছা দিয়ে মুখের ঘাম মুছে- হরিকে চা দিতে বলে ।
পরপর ছুটি গেছে বলে, আজ রিক্সা চালকদের ব্যস্ততা তুঙ্গে ।
ষ্টাণ্ডে বারোখানা রিক্সার প্রত্যেকটা খালি খেপ খেটে যাচ্ছে, বিবেকানন্দ পল্লী
থেকে নাগের বাজার বা সাতগাছি।
বেশীর ভাগই স্কুলের ভাড়া ।
অনেকের আবার পুল কার বা স্কুলের বাস আসে গলির মুখে ।
সদ্য ঘুম ভাঙা বাচ্চা গুলো , পিঠে ব্যাগ নিয়ে উঠে পড়ে
রিক্সা বা গাড়ীতে । আব্দার করে , টফি-
বিস্কুট- বা কেকের জন্য ।
কিনে দিয়ে হাতে দিলে ওদের মুখে ফুটে ওঠে তৃপ্তির আভা ।
হাপ বয়েল ডিমের সাদা অংশের মত আকাশে টুকরো মেঘ । তার গায়ে
আঁকিবুকি কেটে উড়ে যাচ্ছে যন্ত্রপাখি ।
কয়েকডজন শালিক আর চড়ুই ফুরুৎ ফুরুৎ করে উড়ে খাবার খোঁজে ।
খাবার আমরাও খুঁটে
খাই ওই পাখীদের মত ।
মনের সব কালিমা দূর হয় হয় – এমন সময়ে হরির চায়ের ফার্ষ্ট
ইন্সটলমেন্ট হাজির গেলাসে চড়ে ।
শুরু হয়- বিরাটের বিরাটত্বের বাড়াবাড়ি ।
এক ধাক্কায়ে বাস্তবের মাটিতে ।
No comments:
Post a Comment