বিয়ের সময় বরকে যখন মধুপর্ক দেওয়া হয়, তখন তিনি মধুপর্ক না খেয়ে শুধু শুঁকে রেখে দেন। সেই সময় বাংলার নরসুন্দর বলে ওঠে "গৌর, গৌর" | সে আসল কথাটি জানে না বলে, গৌর নিতাইয়ের সঙ্গে তালগোল পাকিয়ে জগাখিচুড়ি মার্কা দুটি শব্দ বলে। সবাই খুশী, আর গৌরপ্রেমীগণ ভক্তিতে গদগদ বল হরি বা হরিবোল দিয়ে দেন।
আসলে শাস্ত্রানুযায়ী কথাটি হল "গৌ-র্গৌ-র্গৌঃ" | গৌঃ-গৌঃ-গৌঃ সন্ধি করলে গৌর্গৌর্গৌঃ হয়।
সূত্রকার বলেছেন মধুপর্ক খেয়ে আচমন করলে নাপিত তিনবার গৌঃ বলবে। (আচান্তোদকায় গৌরিতি নাপিতস্ত্রির্ব্রূয়াৎ) | বলার কারণ -শ্রুতিতে আছে মাংস ছাড়া মধুপর্ক হয় না (নামাংসো মধুপর্কঃ) | এর সোজা সাপটা মানে দাঁড়ায় মধুপর্ক দিলে সঙ্গে মাংসও দিতে হয়। বরকে মধুপর্ক দেওয়ার সময়েও একটি গরু দিতে হয়। এই জন্য ভবদেব লিখেছেন ‘সম্প্রদানকরার জায়গার উত্তরে গরু বেঁধে’ (সম্প্রদানশালায়া উত্তরতঃ স্ত্রীগবীং বদ্ধা) | গোমাংস আজকাল চলে না, এই কারণে পুরোহিতরা চাল দিয়ে একটি গরু বানিয়ে উত্তর দিকে রাখেন। (উল্লেখ্য শ্রাদ্ধে দশ রকমের মাংস লাগে। তার মধ্যে গোমাংস অন্যতম। আধুনিক যুগে মাংসই দেওয়া হয় না, তার বদলে চাল দেওয়া হয়।) বরকে মধুপর্ক দেওয়া হলেই নাপিত জিজ্ঞাসা করে গরুটা তবে কাটা যাক (গৌর্গৌর্গৌঃ) | প্রাচীনযুগে বর মধুপর্ক খেয়ে কি করতেন এবার ভাবুন। এইবার প্রশ্ন করতে পারেন এটা কি ভাবে আটকানো হল। একটা বিধান ছিল খেয়ে কোন কাজ করতে নেই (ভুক্ত্বা কিঞ্চিন্ন চাচরেৎ) | এটা কাজে এল। বিয়ের সময় বরকে উপবাসী থাকতে হয়, সুতরাং তিনি মধুপর্ক না খেয়ে শুধু শুঁকে রেখে দেবেন। এই কারণে বর নাপিতকে গোবধ করতে নিষেধ করেন। এই নিষেধটাও এখন মন্ত্র হয়ে দাঁড়িয়েছে। কলি যুগে মধুপর্কে পশুবধ নিষিদ্ধ (‘মধুপর্কে পশোর্বধঃ’ ইত্যাদি বচন আছে) | বিয়ের সময় গোবধ আর হয় না বলেই সত্যিকারের গরু আর লোকে দেয় না, চালের তৈরী গরু রেখে শুধু মন্ত্রপাঠই করা হয়। মধুপর্কের বাটিটি নাপিতকে দেওয়া হয়।
Saturday, May 17, 2014
গোমাংস খাওয়া নিয়ে প্রচুর তর্ক বিতর্ক হয়েছে । তাই কয়েকটা কথা বলি । অনেকেরই ধারণা হিন্দু ধর্মাবলম্বীরা গোমাংস খান না বা খেত না । এটা সম্পূর্ণ ভুল ধারণা ।
প্রথমেই বলি, সংস্কৃতে একটা প্রাচীন শব্দ আছে । “ গো-সঙ্খ্য” । এই শব্দটার অর্থ হলো- গো পরীক্ষক । পরে অর্থ সঙ্কুচিত হয়ে “গোপ” হয়েছে । এই পরীক্ষা কেন হতো ? কারণ, আর কিছুই না , যে বলদ বা ষাঁড়কে কাটা হবে, তার স্বাস্থ্য কেমন আছে সেটা দেখার জন্য । না পরীক্ষা হলে, সেই মাংস মানুষের জন্য খারাপ হতে পারে । মাংস তিন প্রকার :-
ভূচর ( যারা ভূমিতে চরে )
খেচর ( যারা আকাশে ওড়ে )
জলচর ( যারা জলে বিচরণ করে )
এক জলচর বাদে, স্ত্রী- পশু বধ নিষিদ্ধ ছিল, কারণ তাতে প্রজনন কমে যাবে । মাছেদের লিঙ্গ নির্ধারণ করা শক্ত বলেই হয়তো, এই ব্যাপারটা হয়েছিল ।
বৌদ্ধ যুগের আগে , হিন্দুরা প্রচুর গোমাংস ভক্ষণ করতেন এ তথ্যও অনেকেই জানেন।
ডাঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ প্রণীত Beef in Ancient India গ্রন্থে, স্বামী ভুমানন্দ প্রণীত অনেক গ্রন্থে, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের 'জাতি গঠনে বাধা' গ্রন্থে উল্লেখ আছে। এসব গ্রন্থ থেকে জানা যায়, বৌদ্ধযুগের আগে গো-হত্যা, গো-ভক্ষণ মোটেই নিষিদ্ধ ছিল না। মধু ও গো-মাংস না খাওয়ালে তখন অতিথি আপ্যায়নই অপূর্ণ থেকে যেতো ।
তাই অতিথির আর এক নাম – গোঘ্ন ।
বৌদ্ধ সম্রাট অশোকের সময় থেকে গো-হত্যা নিষিদ্ধ করা হয়। সুতরাং বৌদ্ধ ধর্মের আবির্ভাব ২০০০ বছর আগে হলেও গো-হত্যা আরও অনেক পরে নিষিদ্ধ হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, সম্রাট অশোকের নিষেধাজ্ঞা হিন্দুরা মানছেন কেন?
এটাও ধর্মীয় সংঘাতের ফল । বৌদ্ধ ধর্ম এতই জনপ্রিয় হয়েছিল যে, প্রচুর লোক, বিশেষ করে তথাকথিত “ নীচ জাতি” আকৃষ্ট হয়েছিল, এই ধর্মের প্রতি ।
ব্রাহ্মণ্য বাদী এবং ব্রাহ্মণরা প্রমাদ গুনলেন । তারাও পুরোপুরি মাছ- মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়ে ভেক ধারী হয়ে গেলেন ।
মূলত, এটা উত্তরভারতেই হয়েছিল । তাই এখনও ওটা “গো- বলয়” ।
বেশীদিনের কথা নয়, আলিবর্দির সময়ে রামপ্রসাদের গুরু কৃষ্ণা নন্দ আগম বাগীশ একটা বই লেখেন। নাম – বৃহৎ তন্ত্রসার ।
এতেও অষ্টবিধ মহামাংসের মধ্যে গোমাংস প্রথম বলেই বলা হয়েছে ।
ঋগ্বেদে ফিরে আসি । কি দেখছি ? প্রথম মণ্ডলের ১৬৪ সূক্তের ৪৩ নং শ্লোকে বৃষ মাংসের খাওয়ার কথা আছে । মহিষ মাংসের উল্লেখ আছে পঞ্চম মণ্ডলের ২৯ নং সূক্তের ৮ নং শ্লোকে ।
মোষ বলি আজও হয় । নেপালে যারা মোষের মাংস খায়, তাদের ছেত্রী বলা হয় ।
প্রথমেই বলি, সংস্কৃতে একটা প্রাচীন শব্দ আছে । “ গো-সঙ্খ্য” । এই শব্দটার অর্থ হলো- গো পরীক্ষক । পরে অর্থ সঙ্কুচিত হয়ে “গোপ” হয়েছে । এই পরীক্ষা কেন হতো ? কারণ, আর কিছুই না , যে বলদ বা ষাঁড়কে কাটা হবে, তার স্বাস্থ্য কেমন আছে সেটা দেখার জন্য । না পরীক্ষা হলে, সেই মাংস মানুষের জন্য খারাপ হতে পারে । মাংস তিন প্রকার :-
ভূচর ( যারা ভূমিতে চরে )
খেচর ( যারা আকাশে ওড়ে )
জলচর ( যারা জলে বিচরণ করে )
এক জলচর বাদে, স্ত্রী- পশু বধ নিষিদ্ধ ছিল, কারণ তাতে প্রজনন কমে যাবে । মাছেদের লিঙ্গ নির্ধারণ করা শক্ত বলেই হয়তো, এই ব্যাপারটা হয়েছিল ।
বৌদ্ধ যুগের আগে , হিন্দুরা প্রচুর গোমাংস ভক্ষণ করতেন এ তথ্যও অনেকেই জানেন।
ডাঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ প্রণীত Beef in Ancient India গ্রন্থে, স্বামী ভুমানন্দ প্রণীত অনেক গ্রন্থে, আচার্য প্রফুল্ল চন্দ্র রায়ের 'জাতি গঠনে বাধা' গ্রন্থে উল্লেখ আছে। এসব গ্রন্থ থেকে জানা যায়, বৌদ্ধযুগের আগে গো-হত্যা, গো-ভক্ষণ মোটেই নিষিদ্ধ ছিল না। মধু ও গো-মাংস না খাওয়ালে তখন অতিথি আপ্যায়নই অপূর্ণ থেকে যেতো ।
তাই অতিথির আর এক নাম – গোঘ্ন ।
বৌদ্ধ সম্রাট অশোকের সময় থেকে গো-হত্যা নিষিদ্ধ করা হয়। সুতরাং বৌদ্ধ ধর্মের আবির্ভাব ২০০০ বছর আগে হলেও গো-হত্যা আরও অনেক পরে নিষিদ্ধ হয়। প্রশ্ন হচ্ছে, সম্রাট অশোকের নিষেধাজ্ঞা হিন্দুরা মানছেন কেন?
এটাও ধর্মীয় সংঘাতের ফল । বৌদ্ধ ধর্ম এতই জনপ্রিয় হয়েছিল যে, প্রচুর লোক, বিশেষ করে তথাকথিত “ নীচ জাতি” আকৃষ্ট হয়েছিল, এই ধর্মের প্রতি ।
ব্রাহ্মণ্য বাদী এবং ব্রাহ্মণরা প্রমাদ গুনলেন । তারাও পুরোপুরি মাছ- মাংস খাওয়া ছেড়ে দিয়ে ভেক ধারী হয়ে গেলেন ।
মূলত, এটা উত্তরভারতেই হয়েছিল । তাই এখনও ওটা “গো- বলয়” ।
বেশীদিনের কথা নয়, আলিবর্দির সময়ে রামপ্রসাদের গুরু কৃষ্ণা নন্দ আগম বাগীশ একটা বই লেখেন। নাম – বৃহৎ তন্ত্রসার ।
এতেও অষ্টবিধ মহামাংসের মধ্যে গোমাংস প্রথম বলেই বলা হয়েছে ।
ঋগ্বেদে ফিরে আসি । কি দেখছি ? প্রথম মণ্ডলের ১৬৪ সূক্তের ৪৩ নং শ্লোকে বৃষ মাংসের খাওয়ার কথা আছে । মহিষ মাংসের উল্লেখ আছে পঞ্চম মণ্ডলের ২৯ নং সূক্তের ৮ নং শ্লোকে ।
মোষ বলি আজও হয় । নেপালে যারা মোষের মাংস খায়, তাদের ছেত্রী বলা হয় ।
এছাড়া, বনবাস কালে রামচন্দ্রের লাঞ্চের মেনু কি ছিল, অনেকেরই জানা নেই ।
তিন রকম মদ ( আসব ) গৌড়ী, ( গুড় থেকে তৈরি ) পৌষ্টি, ( পিঠে পচিয়ে তৈরি ) মাধ্বী ( মধু থেকে তৈরি ) । এর সঙ্গে প্রিয় ছিল- শূলপক্ব গোবৎসের মাংস ।
বিশ্বাস না হলে রামায়ণ পড়া উচিত । রামকে যদি কল্প চরিত্র বলেও ধরি, তাহলেও এই গুলো তখনকার খাদ্যাভ্যাসের নমুনা ।
**** বলে রাখি, আমি নিজেও এককালে বিফ রোল খেতাম । এখন বয়সোচিত কারণে , এই মাংস খাওয়া ছেড়েছি ।
তিন রকম মদ ( আসব ) গৌড়ী, ( গুড় থেকে তৈরি ) পৌষ্টি, ( পিঠে পচিয়ে তৈরি ) মাধ্বী ( মধু থেকে তৈরি ) । এর সঙ্গে প্রিয় ছিল- শূলপক্ব গোবৎসের মাংস ।
বিশ্বাস না হলে রামায়ণ পড়া উচিত । রামকে যদি কল্প চরিত্র বলেও ধরি, তাহলেও এই গুলো তখনকার খাদ্যাভ্যাসের নমুনা ।
**** বলে রাখি, আমি নিজেও এককালে বিফ রোল খেতাম । এখন বয়সোচিত কারণে , এই মাংস খাওয়া ছেড়েছি ।
The earliest surviving description of mead is in the hymns of the Rigveda,
• Rigveda Book 5 v. 43:3–4, Book 8 v. 5:6, etc
• Rigveda Book 5 v. 43:3–4, Book 8 v. 5:6, etc
Thursday, May 15, 2014
অ্যাপলিটিক্যাল
******
( একটি জায়গার আড্ডাতে)
( একটি জায়গার আড্ডাতে)
+++++++++
প্রত্যেক পাড়াতেই, এক দুজন
পাঁড় মাতাল বা হাফ পাগল থাকে , সে পশ্চিমবঙের যে জায়গাই হোক না কেন !!
ধরুন- টিভিতে কোনো একজন ইংরেজী বললেন । সেটা, ধুরন্ধর
ইংরেজী বলিয়ে কইয়ে হন বা অক্সফোর্ডের ইংরেজ হন, বুঝতে পারেন না বা বুঝতে কষ্ট হয় ।
অথচ, সেই ইংরেজী , শ্যামবাজার থেকে শুরু করে বক্সীরহাট বা
বারো ভিসার পাঁড় মাতাল বা হাফ পাগলরা এক
লহমায় বুঝে যায় ।
কি আশ্চর্য, তাই না !!!!
আমরা সব গো মুখ্খু !!!
কি আশ্চর্য, তাই না !!!!
আমরা সব গো মুখ্খু !!!
আমার অনেক বদ অভ্যাসের মধ্যে একটি হল- দুধ ছাড়া চা, একদম
খেতে পারি না । মাঝে মধ্যে উপায়ন্তর
না থাকলে, লাল চা খাই বটে, তবে মনে হয় – কি যেন একটা খেলাম না ।
বাড়ীতে সবার আবার উল্টো অভ্যেস । তাই, মাসের বাজারে গুঁড়ো দুধের প্যাকেট আসে না,
এলেও বড় জোর দশ টাকা দামের দুটো প্যাকেট ।
ফুরিয়ে যায় তাড়াতাড়ি । ইদানীং, সকালের জল খাবারে চিঁড়ে খাই,
ওই গুঁড়ো দুধ আর চিনি দিয়ে । অপূর্ব লাগে আমার ।
বিকেলে যথারীতি দুধ ফুরিয়েছে । টিপটিপ, ছিটে ফোঁটা বৃষ্টির
মধ্যেই বেরুলাম – গোপালের মুদীর দোকানে ।
রোব্বার বিকেলে হরির চায়ের দোকান বন্ধ থাকে । তা হলেও
ছাউনির নিচে কিছু আমার মত অবসর প্রাপ্ত বৃদ্ধ ভদ্রলোক বসে থাকেন ।
সারা দুনিয়াটাই এঁদের কাছে খারাপ । সকালে, হকার যদি কাগজ
দেওয়ার ফাঁকে এসে হরির দোকানে চা খায়, তবে কেরিয়ার বা হ্যাণ্ডেলের সামনে থেকে কাগজ
চেয়ে নিয়ে পড়েন ।
জীবনে কিনে পড়েন না । ষ্টাণ্ডে আটকানো কাগজ দাঁড়িয়ে পড়েন
খুঁটিয়ে । তা, সেটা যে দলেরই মুখপাত্র হোক
না কেন !!!!!
আমাকে দেখে, দয়া করে ডাকলেন ওনাদের আসরে ।
কারও ছেলে/মেয়ে বা নাতি/নাতনীর ফেসবুক অ্যাকাউন্ট আছে হয়তো
। শুনেছেন- আমি হরির দোকানের আড্ডা নিয়ে লিখি ।
এখন একটা গুরু
গম্ভীর বিষয় আছে, এর মধ্যে । কোনো একজন
হয়তো এঁদের বুঝিয়েছে- ফেসবুক একটা মোটা বই ।
বুঝলাম, ওনাদের অনন্ত কৌতুহলের হাত থেকে বাঁচার জন্য – এই
সহজ পদ্ধতিটা কেউ না কেউ নিয়েছে হয়তো ।
========
সেখানে একজন বললেন :- আপনের বই তো বাড়ীতে রাখনের জন্য জায়গা থাকবো না, যা শুনতাসি । কিলো দরে বেইচ্যা দেওনের আগে, আমাগো কইয়েন !!!
সেখানে একজন বললেন :- আপনের বই তো বাড়ীতে রাখনের জন্য জায়গা থাকবো না, যা শুনতাসি । কিলো দরে বেইচ্যা দেওনের আগে, আমাগো কইয়েন !!!
আমার জিজ্ঞাসা- কেন, বলুন তো ?
আরে !!!! ওরা তো কিন্যাই আর বেচবো না । ওগো দোকানে যাইয়া দেখন লাগবো- কি লেখসেন আফনে ।
====
Subscribe to:
Posts (Atom)