শেয়ালদা থেকে উত্তরবঙ্গ যাওয়ার ট্রেনের সিস্টেমটা এইরকম :-
টিটি, গার্ড এবং ড্রাইভার- যায়, শেয়ালদা থেকে মালদা । তারপর
মালদায় পূর্ব রেলের এঞ্জিনও বদল হয় ।
তখন এঞ্জিন লাগানো হয়, পূর্বোত্তর সীমান্ত রেলের । গার্ড,
টিটি, ড্রাইভারও বদল হয়ে যায় নিউ জলপাইগুড়ি ষ্টেশন পর্যন্ত ।
এঞ্জিন এক থাকলেও, এখানে আবার স্টাফ বদল হয় । যায়, টার্মিনাল
ষ্টেশন পর্যন্ত ।
আমি মূলত দুটো ট্রেনের কথা বললাম – উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস আর
কাঞ্চনকন্যা এক্সপ্রেস । এদের যাত্রাপথ শেষ হয়- যথাক্রমে, নিউ কোচবিহার আর
আলিপুরদুয়ার জংশনে ।
তবে, কোচ অ্যাটেনডান্ট যায় টানা । কখনও এই ট্রেন তো কখনও ওই
ট্রেন । ফলে, নিয়মিত যাত্রীদের এরা চেনে মোটামুটি ।
এটা না বললে, ঘটনাটা পরিস্কার হবে না ।
শুনেই হোক বা গ্লাসডোরের কাঁচের ভেতর থেকে দেখে- কোচ অ্যাটেনডান্ট “মৃতদেহ”কে
দেখেই বলল :-
উফ্ ! আর পারি না, এই ভিকিকে নিয়ে ।
কি কি হলো? সমবেত উৎকণ্ঠা ।
কি আর হবে ! এই ভিকি গুপ্তা সপ্তাহে দুবার করে আসে জয়গাঁ
থেকে । ওখান থেকে হাসিমারা আধঘণ্টা মত । জয়গাঁ হলো ফুণ্ট সোলিংয়ের ঢোকার পথ ।
ব্যাটার দোকান আছে জয়গাঁতে । শেয়ালদার টাওয়ার হোটেলে বসে
আকণ্ঠ মদ গেলে, কোলকাতায় সওদা পাতি করে ।
সময় হলেই ট্রেনে উঠেই বার্থে ঘুমিয়ে পড়ে । আগেই টিকিট তো ওর
করাই থাকে ।
তারপর প্রায়ই বার্থ থেকে পড়ে যায়, তাও ব্যাটার ঘুম ভাঙে না
।
আমাকেই ভোগান্তি পোহাতে হয় সব । রড ঠিক করা, পর্দা সেলাই
করা ! গালাগালিও খাই ওপরওয়ালার কাছে ।
বলেই টেনে একটা লাথি কসালো ওই ভিকি গুপ্তার পেছনে ।
কৌন মারা বে ? ভিকি এবারে উঠে বসলো ।
মৈঁনে- বিশুর জবাব (অ্যাটেনডান্ট)
ওহো ! ফির গির গয়া থা কেয়া মৈঁ ?
শালার ফিকির দেখো ! যেন হিন্দি সিনেমার স্মৃতিভ্রষ্ট নায়ক !
এক যাত্রী রেগে মেগে বললেন ।
আমরা ভাবছি – খুন, আর ব্যাটা কিনা মাতাল ! সড়কি লাও, ব্যাটাকে সত্যিই খুন করেগা ।
সেই বৃদ্ধ বললেন ।
আমার কেন যেন ছিনাথের কথা মনে পড়াতে, ফিক করে হেসে ফেললাম ।
বৃদ্ধ রেগে কাঁই আমার ওপর !
হাসতা হ্যায় ? আপনি একঠো দামড়া ! সব কিলাকে কাঁঠাল পাকিয়ে
দিলো, আর আপনি হাসতা হ্যায় ?
No comments:
Post a Comment