আপ্পা রাওয়ের ( তেলুগু ভদ্রলোক) দেওয়া কিং সাইজ সিগারেটটা
যে পুরো খেতে পারবো না, সেটা বুঝি নি আগে ।
দাঁড়াতে কষ্ট হচ্ছিল । পায়ের লিগামেন্টে টান । একটু খেয়েই
খোলা দরজা দিয়ে ফেলতেও মন চাচ্ছিল না, দামী সিগারেটটা ।
হঠাৎ দেখি, পাশের এসি থ্রি টায়ারের ভেষ্টিবিউল
দিয়ে টিটি আসছে ।
সাড়ে সর্বনাশ ।
একে, পায়ে ব্যাথা তার ওপর টিটি ! পা
দুটো থরথর করে কাঁপছে আমার ।
টিটি এসেই কটমট করে
তাকালেন ।
লজ্জা করে না আপনাদের , এভাবে
সিগারেট খেতে ?
মানে, মানে
কিসের মানে ?
বুইলেন কিনা, সিগারেট খাওয়া যে ট্রেনে মানা, সেটা জানি তবে ওই !
কিসের ওই ? জানেন, আমার সিগারেট কেনা হয় নি ! আমাকে কে দেবে ?
আপ্পারাওকে বললাম দিতে । প্রমোদ ফিক ফিক করে হাসছে তখন ।
আপ্পারাও দিতেই ঈগলের মত ছোঁ মেরে নিলেন, টিটি মহাশয় ।
আমিও মায়া ত্যাগ করে আমার সিগারেটটা ফেলতে যাবো, টিটি হাঁ হাঁ করে উঠলেন ।
করেন কি ?
মানে, দাঁড়াতে কষ্ট হচ্ছে তো, তাই ফেলে দিয়ে সিটে ফিরে যাবো ।
দিন, ওটা দিন আমায় । দামী জিনিস নষ্ট
করতে নেই ।
দান করে, গ্লাসডোর ঠেলে, দু পা এগোতেই এক মোটা মতন ভদ্রলোক, সাইড লোয়ার বার্থ থেকে পর্দা ফাঁই
করে, কম্বল জড়িয়ে পড়ে গেলেন প্যাসেজে । রডটাও ভেঙে গড়াগড়ি ।
চারপাশে সোরগোল । ভদ্রলোকের নিথর দেহ কোচের মাটিতে ।
এক বৃদ্ধ ভদ্রলোক বললেন, পাখা লাও, জল লাও ।
যাকে বললেন- সে তার পাশের লোককে কথার ব্যাটনটা রিলে রেসের
মত পাস অন করে দিলেন ।
লাও তো বটে, আনে কে?
ফচকে একজন গেয়ে উঠলো:-
এ তুমি কেমন তুমি, এসি কামরায় পাখা চাও !
আরেকজন চ্যাঁচালেন :- খুন , খুন !
পুলিশ বোলাও ।
বাঙালি ভয় পেলেই, হিন্দি বলে আর রাগলে ইংরেজী বলে – অরণ্যের প্রাচীন প্রবাদ।
একজন তো ফিক্সড্ পাখাকে ধরে টানাটানি শুরু করলেন, ঘোরাবেন বলে ।
ভদ্রলোকের নিথর দেহ নট নড়ন চড়ন !
কম্বল মোড়া এক মৃতদেহ, সকলকে মুখ
ভ্যাঙাচ্ছে ।
(চলবে)
No comments:
Post a Comment