Friday, March 6, 2015

টুকরো- টাকরা-৬

রাতে, শুয়ে পড়ার আগে, আপ্পারাও একটা গোল পাকিয়েছিল । ওর এই প্রথমবার শিলিগুড়ি আসা ।

 অফিসের কাউকে জিজ্ঞেস না করেই –  এজেন্সিকে দিয়ে শিলিগুড়ি জংশন পর্যন্ত টিকিট কেটে ট্রেনে চেপে পড়েছে ।

একটা নামকরা সফ্ট ড্রিংক কোম্পানিতে আছে ও ।

মহেশ বলল – নিউ জলপাইগুড়ি নামাটাই ভালো । তর্ক জুড়ল আপ্পারাও ।

 ভাট ইজ দিস ? আই ভুইল গো টু শিল্লিগুড়ি, ভাই টু গেট ডাউন টু জলপাইগুড়ি ?

ইটস্ নিউ জলপাইগুড়ি, নট জলপাইগুড়ি !

নিউ অর ওল্ড ! ইট ইজ সেম ! আফটার অল জলপাইগুড়ি !

ইউ বেটার আস্ক ইউর পিপল, আপ্পারাও জী

অক্কে !

ফোনানোর পর জানল- নিউ জলপাইগুড়ি নামাটাই ভালো ।

সারি সারি, মহেশজী ! উ আর রাইট্ট্ ! ভি ভিল গেট ডাউন অ্যাট্ নিউ জলপাইগুড়ি।
মহেশ মুচকি হেসে নিজের বার্থে শুতে চলে গেল ।

রাতে টয়লেট যাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে পড়লাম । দরজা খুলে দেখি, ট্রেন দাঁড়িয়ে মালদাতে ।

চকিতে, কত ঘটনা চলে গেল মনের ভেতর ফ্ল্যাশ ব্যাকে ।

দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফিরে এসে শুয়ে পড়লাম নিজের বার্থে ।

ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি, সকালের নরম রোদ, জানলার কাঁচ দিয়ে এসে পড়েছে বার্থে । পর্দা তোলাই ছিল ।

লোকজনের নামার ব্যস্ততা ! বুঝলাম ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ি ঢুকছে । গতিও বেশ মন্থর।
হঠাৎ একজন আমাকে প্রণাম করল ।

ঘাবড়ে গিয়ে বললাম – একি করছেন ?

না না ! আপনি ক্ষণ জন্মা !

কেন কেন ?

আপনার নাকের গান সারা রাত্তির ধরে শুনেছি আমি এবং সারা কামরা ।কত রকম রাগ রাগিণী !  আহা,ডোভার লেনেও এই রকম শুনি নি !

আওয়াজ দিচ্ছেন ভাই ? না হয়, আমার নাক ডাকে !

ছি ছি ! আওয়াজ দেবো কেন ! আমার বাবা কাকারাও খানদানি নাক ডাকিয়ে ছিলেন, তবে আপনি  এই ব্যাপারে ওস্তাদ বড়ে গুলাম আলি ! তারিফে কাবিল্ ! তোফা কবুল কিজিয়ে !

ছোকরা, ট্রলি ব্যাগ টেনে নিয়ে চলে গেল !

এদিকে আপ্পারাও আর মহেশও নেমেছে তাদের গন্তব্য স্থলে । ফোন নং দেওয়া নেওয়া সারা !
প্রমোদও নেমে জলখাবারের সন্ধানে প্ল্যাটফর্মে ।

আমি দরজাতে দাঁড়িয়ে । ট্রেন ছাড়ার সংকেত ! প্রমোদের দেখা নেই !

ট্রেন ছেড়েও দিল !

মুখ বাড়িয়ে দেখলাম, প্রমোদের হাতে প্যাকেট নিয়ে দৌড় কামরার দিকে । ট্রেনের গতিও বেশ ভালো পিক আপ নিচ্ছে ।

কভি কামরা, কভি প্রমোদ ! কভি প্রমোদ , কভি কামরা

করে করে প্রমোদ উঠেই পড়ল ট্রেনে !


খুদা মেহের বান ! কামরার হাতল ধরতে গিয়ে টিপিনের প্যাকেটটাই পড়ে গেছে !

No comments: