রাতে, শুয়ে পড়ার আগে, আপ্পারাও একটা গোল পাকিয়েছিল । ওর
এই প্রথমবার শিলিগুড়ি আসা ।
অফিসের কাউকে
জিজ্ঞেস না করেই – এজেন্সিকে দিয়ে শিলিগুড়ি
জংশন পর্যন্ত টিকিট কেটে ট্রেনে চেপে পড়েছে ।
একটা নামকরা সফ্ট ড্রিংক কোম্পানিতে আছে ও ।
মহেশ বলল – নিউ জলপাইগুড়ি নামাটাই ভালো । তর্ক জুড়ল আপ্পারাও
।
ভাট ইজ দিস ?
আই ভুইল গো টু শিল্লিগুড়ি, ভাই টু গেট ডাউন টু জলপাইগুড়ি ?
ইটস্ নিউ জলপাইগুড়ি, নট জলপাইগুড়ি !
নিউ অর ওল্ড ! ইট ইজ সেম ! আফটার অল জলপাইগুড়ি !
ইউ বেটার আস্ক ইউর পিপল, আপ্পারাও জী
অক্কে !
ফোনানোর পর জানল- নিউ জলপাইগুড়ি নামাটাই ভালো ।
সারি সারি, মহেশজী ! উ আর রাইট্ট্ ! ভি ভিল গেট ডাউন অ্যাট্
নিউ জলপাইগুড়ি।
মহেশ মুচকি হেসে নিজের বার্থে শুতে চলে গেল ।
রাতে টয়লেট যাওয়ার জন্য ঘুম থেকে উঠে পড়লাম । দরজা খুলে
দেখি, ট্রেন দাঁড়িয়ে মালদাতে ।
চকিতে, কত ঘটনা চলে গেল মনের ভেতর ফ্ল্যাশ ব্যাকে ।
দীর্ঘশ্বাস ফেলে ফিরে এসে শুয়ে পড়লাম নিজের বার্থে ।
ঘুম ভাঙ্গতেই দেখি, সকালের নরম রোদ, জানলার কাঁচ দিয়ে
এসে পড়েছে বার্থে । পর্দা তোলাই ছিল ।
লোকজনের নামার ব্যস্ততা ! বুঝলাম ট্রেন নিউ জলপাইগুড়ি
ঢুকছে । গতিও বেশ মন্থর।
হঠাৎ একজন আমাকে প্রণাম করল ।
ঘাবড়ে গিয়ে বললাম – একি করছেন ?
না না ! আপনি ক্ষণ জন্মা !
কেন কেন ?
আপনার নাকের গান সারা রাত্তির ধরে শুনেছি আমি এবং সারা
কামরা ।কত রকম রাগ রাগিণী ! আহা,ডোভার লেনেও
এই রকম শুনি নি !
আওয়াজ দিচ্ছেন ভাই ? না হয়, আমার নাক ডাকে !
ছি ছি ! আওয়াজ দেবো কেন ! আমার বাবা কাকারাও খানদানি নাক
ডাকিয়ে ছিলেন, তবে আপনি এই ব্যাপারে ওস্তাদ
বড়ে গুলাম আলি ! তারিফে কাবিল্ ! তোফা কবুল কিজিয়ে !
ছোকরা, ট্রলি ব্যাগ টেনে নিয়ে চলে গেল !
এদিকে আপ্পারাও আর মহেশও নেমেছে তাদের গন্তব্য স্থলে ।
ফোন নং দেওয়া নেওয়া সারা !
প্রমোদও নেমে জলখাবারের সন্ধানে প্ল্যাটফর্মে ।
আমি দরজাতে দাঁড়িয়ে । ট্রেন ছাড়ার সংকেত ! প্রমোদের দেখা
নেই !
ট্রেন ছেড়েও দিল !
মুখ বাড়িয়ে দেখলাম, প্রমোদের হাতে প্যাকেট নিয়ে দৌড় কামরার
দিকে । ট্রেনের গতিও বেশ ভালো পিক আপ নিচ্ছে ।
কভি কামরা, কভি প্রমোদ ! কভি প্রমোদ , কভি কামরা
করে করে প্রমোদ উঠেই পড়ল ট্রেনে !
খুদা মেহের বান ! কামরার হাতল ধরতে গিয়ে টিপিনের প্যাকেটটাই
পড়ে গেছে !
No comments:
Post a Comment