++++++++++++
নবা, ইয়ার, বাবলু, সেলিম, লক্ষণ, আবদুল এবং আরও অনেক – এদের
চেনার কথা নয় কারোরই ।
ভোর ভোর, এদেরই প্যাডেল ভ্যানগাড়ী ভর্তি সব্জী বা পেছনে
মাছের চুপড়ী নিয়ে সাইকেল গুলো দাঁড়িয়ে থাকে সারসার হরির দোকানের সামনে ।
কেউ এসেছে, লাউহাটি, খড়িবাড়ী (উত্তর চব্বিশ পরগণা), কেউ বা ভোজেরহাট
( দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা ) থেকে ।
রাত দেড়টা থেকেই
শুরু হয়ে যায় এদের তৎপরতা । সাইকেল বা ভ্যানগাড়ী তে ভর্তি করে সব্জী তোলা হয় ।
আর যারা মাছওয়ালা, তারা চলে যায় খড়িবাড়ী । মাছ নিয়ে আসে
সেখান থেকে ।
মাছের খুব আকাল এখন । আগে যেখানে ভালো মাছের যোগান ছিল,
সেখানে প্রায় নেইতে এসে ঠেকেছে ।
সব্জীও তাই । তবু পেট চালাতে হবে ।
একপেট পান্তা খেয়ে রওনা হয় সাইকেল বা ভ্যান নিয়ে, সার বেঁধে
সবাই রাস্তায় নামে । শীত, বর্ষা, গরম সব ঋতুতেই একই ছবি ।
রাস্তায় খোলা থাকে চায়ের দোকানগুলো, অত রাতেও । সাঁ সাঁ করে
ছুটে যায় প্রাইভেট বা অন্য গাড়ী । তোয়াক্কা নেই
এদের প্রতি ।
অসাবধান হলেই, এক ছোবলেই ছবি । প্রাতঃকৃত্য সেরে নেয় মাঠেই,
আসার সময় ।
পঁয়ত্রিশ কিলোমিটার মত- সাইকেল বা ভ্যান চালিয়ে এসে পৌঁছয়-
দমদমের আনাচে কানাচে ।
কেউ কেউ আবার ম্যাজিক গাড়ীতেও আসে, অতখানি রাস্তা শরীর আর দেয় না, সাইকেল বা ভ্যান
চালাতে ।
এরা ভ্যান বা
সাইকেল রাখে স্থানীয় কোনো জায়গায় ।
পৌঁছেই বেরিয়ে পড়ে
সেই সব নিয়ে । যারা ডিম আনে, তাদের বাধ্য হয়েই ৯৩ নং বাসে আসতে হয়, সাবধানে
। না হলে, ডিম গুলো ভেঙে যেতে পারে ।
টাটকা, হাঁস বা দেশী মুরগীর ডিমের চাহিদা প্রচুর । তবে,
এদেরও যোগান কম আজকাল ।
জিরিয়ে নেয় হরির
দোকানে, লেড়ে বিস্কুট আর চা খেয়ে ।
পাইকারি হিসেবে বেচা হয় সব্জী । পাঁচ কিলোতে এক পাল্লা ।
স্থানীয় ভ্যানওয়ালারা কিনে নেয় সেসব ।
দরাদরির হাঁকডাক, বাস লরির আওয়াজকে ছাপিয়ে যায় ।
যোগান থাকলে, লাভ ২০০ থেকে ৩০০ টাকাও হয় । না হলে শ দেড়েক ।
ধুঁকতে ধুঁকতে বাড়ি ফেরে সব বেলা একটা দেড়টায় ।
এবারে গরম ভাত, ডাল, আলু সেদ্ধ আর কুচো মাচের জিরে বাটা ঝোল
খেয়ে, মাটির মেঝেতেই লুটিয়ে পড়ে ঘুমে,মড়ার
মত ।
সন্ধে হব হব সময় উঠে শুরু হয়, পরের দিনের তৎপরতা ।
সময় নেই অন্য কিছু নিয়ে ভাববার । সংসার, মা, চাচী, বৌ সামলায়
।
=================
চলুন বাজার করে আসি ।
চলুন বাজার করে আসি ।
No comments:
Post a Comment