++++++
নিজেদের বাড়ী । মা অনেকদিন আগেই গত । বাবাও কিছুদিন আগে চলে
গেছেন । বড় ভাইকে ডেকে, বাবা বলেছিলেন :-
ছোটটাকে দেখিস । জানি, ও ব্যাটা
অকর্ম্মার ঢেঁকি আর আলসেমিতে সক্কলকে টেক্কা দেয়।
তবু, তোর নিজের ভাই । খেয়াল রাখিস ওর
প্রতি ।
ছোট দিনরাত পাড়ায় চরকী দেয় । বাজে নেশা নেই , তবে ওই – আলস্য !
বড়, বর্ধমানে ডেলি প্যাসেঞ্জারী করে ।
বিয়ে করে নি, যদি ছোট ভাইয়ের সাথে বৌয়ের গোলমাল বাধে ।
ভোরবেলা বেরোনোর আগে, রান্না-
বান্না করে সাজিয়ে রেখে যায় ভাইয়ের জন্য । সন্ধেবেলা এসে আবার রান্না করে ।
একদিন দেরী হয়ে যাবার ফলে, ভাইকে বলল
– দুধটা গরম করে রাখিস ।
ছোট হিটারে প্যান চাপিয়ে দুধ বসিয়ে , বিছানায় চিৎপটাং ।
এদিকে দুধ ফুটে ফুটে প্রথমে ক্ষীর, তারপর
পুড়ে ছারখার । এমনকি হিটারটাও নষ্ট হলো।
বড় ভাই ফিরে এসে এই কাণ্ড দেখে অবাক ।
জিজ্ঞেস করাতে ছোট ভাইয়ের জবাব:- গরম করার দায়িত্ব আমার, হয়ে গেলে নামানোর দায়িত্ব তোমার ।
পাড়ার লোক বড়কে বলে- ছোট ভাইকে কিছু করতে বলুন, এতো আপনার সর্বনাশ করবে ।
বড় ভাই বাবার কথা বলে আর চুপ করে থাকে ।
এক ছুটির দিনে, সন্ধেবেলা ছোট মশা মেরে সাদা
দেওয়ালে লটকে দিচ্ছে । লালে লাল হয়ে গেল, পরিচ্ছন্ন সাদা দেওয়াল ।
বড় ক্ষুব্ধ হয়েই ছোটকে বলল – এটা কি
করছিস ?
বাড়ীটা বাবার, তোর মাথা না ঘামালেও চলবে ।
-----
এই করে চলছে । বড় একদিন বেরোনোর সময় দেখল, ছোটোর ঘরের দরজা বন্ধ । খাবার রেখে চলে গেল বড় ।
রাতে এসে দ্যাখে, এঁটো থালা পড়ে আছে বাইরে ।
এই রকম দু তিন দিন চলার পর বড় এসে দ্যাখে- খাবার যে রকম, সেরকমই পড়ে আছে ।
ভয় পেয়ে দরজায় ধাক্কাধাক্কি । তাও ছোট দরজা খোলে না ।
পাড়ার লোক এসে দরজা ভেঙে ঢুকলো ঘরে ।
ছোট বিছানায় শুয়ে পা নাচিয়ে চলেছে । পেছনের দেওয়ালে বড় করে
লেখা:-
যে শুয়ে থাকে, তার ভাগ্যও শুয়ে থাকে ।
লোকেরা জিজ্ঞেস করল :- জানোই যদি, তবে শুয়ে
আছো কেন ?
উদ্দমের অভাব –ছোটোর জবাব ।
থাকতে না পেরে সবাই মিলে গণধোলাই দিল, খিস্তি দিয়ে । তারপর থেকেই ছোট এখন লাইনে এসেছে ।
No comments:
Post a Comment