*****
কিছু শব্দের জন্য আগাম মাফী চাইছি
++++++++++
আমার প্রোফাইলে বহু ডাক্তার বন্ধু আছেন । আমি নিশ্চিত,
তাঁরা রাগ করবেন না, এই লেখাটা পড়ে ।
হয় কি জানেন, সব পেশাতেই
হাসির উপাদান ছড়িয়ে থাকে । আমাদের নজর এড়িয়ে যায়, সেই সব ঘটনা ।
বেচুবাবু জীবনে প্রচুর ডাক্তার বাবু ও বিবিদের সংস্পর্শে
এসেছি । অধিকাংশই গুণী এবং বন্ধু বৎসল আর রসিক । পেশার বাইরে তাঁরা সাহিত্য
প্রেমী, তুখোর আড্ডবাজ, থিয়েটার অভিনেতা এবং ভালো গাইয়ে বাজিয়ে । তবে, ঐ যে বলে না
– প্রত্যেক গুণী মানুষের মাথায় ছিট থাকে !!! এটা তাঁদের ছিল এবং আছে । আর আছে বলেই
তাঁরা এক এক জন পরিপূর্ণ মানুষ ।
কিছু ব্যতিক্রম তো থাকবেই, কারণ ব্যতিক্রমই বিধির নিয়ামক ।
বেচু বাবু লাইনে “ডিটেলিং” বলে একটা শব্দ আছে । কোন একটা
নির্দিষ্ট ওষুধের গুণাবলীকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বর্ণণ করাকে “ডিটেলিং” বলে ।
অনেক ডাক্তার এই “ডিটেলিং” কে খুব একটা পছন্দ করেন না, যদি
না সেটা নতুন মলিকিউল ( ওষুধের প্রধান
উপাদান) হয় ।
আমাদের সময়ে তো নেট ছিল না, তাই নতুন মলিকিউল এলে আমাদের
ডিটেলিং মন দিয়ে শুনতেন তাঁরা ।
পুরোনো মলিকিউল হলে, আর শুনতেন না । শুধু ব্র্যাণ্ড নেম
শুনেই খান্ত হতে বলতেন।
অনেক বেচুবাবু আবার এগুলো বুঝেও বুঝতে পারতো না । তারা জোর
করে শোনাবেই আর ডাক্তাররা শুনবেন না ।
সবচেয়ে দুঃখের কথা কি জানেন ? এক বেচুবাবুর সাথে – একজন
মহিলা চিকিৎসকের প্রেম করে বিয়েটাই ভেঙে যেতে বসেছিল এই “ডিটেলিং” য়ের কারণে ।
মহিলা বলেছিলেন:- তোমার সাথে বিয়ের আগেই যদি একই কথা বারবার
শুনতে হয়, তবে আমার পোষাবে নি বাপু ।
বেচু বাবু সাবধান হয়ে গিয়েছিলেন বলে শেষপর্যন্ত বিয়েটা হয়
এবং তাঁরা এখন সুখী দম্পতী ।
তখন, আবার ডাক্তার কুলের ষ্টেটাস সিম্বল ছিল- কত বেচু
তাঁদেরকে রোজ ভিজিট করেন ( এখনকার কথা
বলতে পারবো না ) ।
এই রকমই এক মহিলা চিকিৎসকের ( গাইনী ) কথা প্রথমে বলি । দিনে
প্রায়, ৩০/৩৫ জন রোগী দেখতেন । বাংলা ভাষা প্রেমী , যতটা পারেন, বাংলায় কথা বলেন। মেডিক্যাল টার্মের আবার বাংলা নেই তাই বাধ্য হয়েই
ইংরেজী বলতেন তখন।
তবু তাঁর চেষ্টার অন্ত ছিল না ।
একবার এক মহিলা রোগীকে বলেছিলেন:- আপনার জরায়ু কর্তন করতে
(হিসটেক্টটমি) হইবে ।
রোগীর পতন এবং মূর্চ্ছার মত অবস্থা হয়েছিল ।
এহেন জমজমাট
প্র্যকটিশ করা মহিলাকে আর
বেচুবাবুরা ভিজিট করে না । মহিলার “পিষ্টিজে” টানাটানি ।
একবার রাস্তায় আমাকে
দেখে গাড়ী দাঁড় করালেন । তারপর সেই
অবধারিত প্রশ্নটা ধেয়ে এলো আমার দিকে ।
শুনুন- আপনি একজন সিনিয়ার রিপ্রেজেনটেটিভ । বলুন তো, এত কম
রিপ্রেজেনটেটিভ আমায় ভিজিট করছেন কেন ?
বললাম :- যদি অভয় দেন তো বলি !
না না বলুন, আমায় জানতেই হবে কারণটা
যত নষ্টের মূল আপনার চেম্বারে কলিং বেলের ওপর বড় বড় করে
লেখাটা !!!!
ভদ্রমহিলা আর মনে করতেই পারেন না, কি লেখা আছে সেখানে !!
বলুন না- কি লেখা আছে ? আমার অমতে কিছু হয় নি !!
না না, সেটা নয়, তবে কি জানেন সবার মন তো সাদা নয় । আপনার
যেমন সাদা মনে কাদা নেই !!!
বকবক ছাড়ুন । কথাটা বলবেন তো !
মানে
আহা বলুন না !!!
বলেই ফেলি
হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
লেখা আছে :- টিপিয়া ডাকিবেন ।
++++++++++
এক বেচু বাবু ডায়াবেটিসের একটা ওষুধের ডিটেলিং করছেন
ডাক্তার বাবুর কাছে ।
পুরোনো মলিকিউল । তবু বেচু বাবু একটা বড় ছবি দেখিয়ে ( একজন নগ্ন পুরুষ, শুধু
লজ্জাস্থানটা একটা বড় পাতায় ঢাকা ) “ অ” থেকে “৺ ” বলেই যাচ্ছে ।
ডাক্তার বাবু উসখুস করছেন । কিছু বলতেও পারছেন না । অবশেষে
শেষ হলো সেই দীর্ঘ ডিটেলিং ।
সমাপ্তির পর বেচু বাবু প্রশ্ন করলেন ডাক্তার বাবুকে :- কোনো
প্রশ্ন স্যার ?
একটাই প্রশ্ন !
কি স্যার ?
আচ্ছা, ওই পাতাটা কি পাতা ?
স্যার, এটা তো বলতে পারবো না । তবে, আমাদের মেডিক্যাল
ডিপার্টমেন্টকে চিঠি লিখে জেনে আপনাকে বলবো স্যার !!!
এ বাবা, আপনি এত জানেন, অথচ এই পাতাটার নাম জানেন না ?
সত্যি স্যার !!! জানি না !!
আমি বলি ?
বলুন বলুন
সিম্পল !!! ওটা ধনেপাতা !!!
###########
No comments:
Post a Comment