Tuesday, February 11, 2014

কিস্সা ডক্টরোঁকা


 *****
কিছু শব্দের জন্য আগাম মাফী চাইছি
++++++++++


আমার প্রোফাইলে বহু ডাক্তার বন্ধু আছেন । আমি নিশ্চিত, তাঁরা রাগ করবেন না, এই লেখাটা পড়ে ।

হয় কি জানেন, সব পেশাতেই  হাসির উপাদান ছড়িয়ে থাকে । আমাদের নজর এড়িয়ে যায়, সেই সব ঘটনা ।

বেচুবাবু জীবনে প্রচুর ডাক্তার বাবু ও বিবিদের সংস্পর্শে এসেছি । অধিকাংশই গুণী এবং বন্ধু বৎসল আর রসিক । পেশার বাইরে তাঁরা সাহিত্য প্রেমী, তুখোর আড্ডবাজ, থিয়েটার অভিনেতা এবং ভালো গাইয়ে বাজিয়ে । তবে, ঐ যে বলে না – প্রত্যেক গুণী মানুষের মাথায় ছিট থাকে !!! এটা তাঁদের ছিল এবং আছে । আর আছে বলেই তাঁরা এক এক জন পরিপূর্ণ মানুষ ।

কিছু ব্যতিক্রম তো থাকবেই, কারণ ব্যতিক্রমই বিধির নিয়ামক ।

বেচু বাবু লাইনে “ডিটেলিং” বলে একটা শব্দ আছে । কোন একটা নির্দিষ্ট ওষুধের গুণাবলীকে পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে বর্ণণ করাকে ডিটেলিংবলে

অনেক ডাক্তার এই “ডিটেলিং” কে খুব একটা পছন্দ করেন না, যদি না সেটা নতুন মলিকিউল  ( ওষুধের প্রধান উপাদান)  হয় ।

আমাদের সময়ে তো নেট ছিল না, তাই নতুন মলিকিউল এলে আমাদের ডিটেলিং মন দিয়ে শুনতেন তাঁরা ।
পুরোনো মলিকিউল হলে, আর শুনতেন না । শুধু ব্র্যাণ্ড নেম শুনেই খান্ত হতে বলতেন।

অনেক বেচুবাবু আবার এগুলো বুঝেও বুঝতে পারতো না । তারা জোর করে শোনাবেই আর ডাক্তাররা শুনবেন না ।

সবচেয়ে দুঃখের কথা কি জানেন ? এক বেচুবাবুর সাথে – একজন মহিলা চিকিৎসকের প্রেম করে বিয়েটাই ভেঙে যেতে বসেছিল এই “ডিটেলিং” য়ের কারণে ।

মহিলা বলেছিলেন:- তোমার সাথে বিয়ের আগেই যদি একই কথা বারবার শুনতে হয়, তবে আমার পোষাবে নি বাপু ।

বেচু বাবু সাবধান হয়ে গিয়েছিলেন বলে শেষপর্যন্ত বিয়েটা হয় এবং তাঁরা এখন সুখী দম্পতী ।

তখন, আবার ডাক্তার কুলের ষ্টেটাস সিম্বল ছিল- কত বেচু তাঁদেরকে রোজ ভিজিট করেন  ( এখনকার কথা বলতে পারবো না ) ।

এই রকমই এক মহিলা চিকিৎসকের ( গাইনী ) কথা প্রথমে বলি । দিনে প্রায়, ৩০/৩৫ জন রোগী দেখতেন । বাংলা ভাষা প্রেমী , যতটা পারেন, বাংলায় কথা বলেনমেডিক্যাল টার্মের আবার বাংলা নেই তাই বাধ্য হয়েই ইংরেজী  বলতেন  তখন
তবু তাঁর চেষ্টার অন্ত ছিল না
একবার এক মহিলা রোগীকে বলেছিলেন:- আপনার জরায়ু কর্তন করতে (হিসটেক্টটমি) হইবে ।
রোগীর পতন এবং মূর্চ্ছার মত অবস্থা হয়েছিল ।

এহেন জমজমাট  প্র্যকটিশ করা  মহিলাকে আর বেচুবাবুরা ভিজিট করে না । মহিলার “পিষ্টিজে” টানাটানি ।

একবার রাস্তায় আমাকে  দেখে গাড়ী দাঁড় করালেন ।  তারপর সেই অবধারিত প্রশ্নটা ধেয়ে এলো আমার দিকে ।
শুনুন- আপনি একজন সিনিয়ার রিপ্রেজেনটেটিভ । বলুন তো, এত কম রিপ্রেজেনটেটিভ আমায় ভিজিট করছেন কেন ?

বললাম :- যদি অভয় দেন তো বলি !

না না বলুন, আমায় জানতেই হবে কারণটা

যত নষ্টের মূল আপনার চেম্বারে কলিং বেলের ওপর বড় বড় করে লেখাটা !!!!

ভদ্রমহিলা আর মনে করতেই পারেন না, কি লেখা আছে সেখানে !!
বলুন না- কি লেখা আছে ? আমার অমতে কিছু হয় নি !!

না না, সেটা নয়, তবে কি জানেন সবার মন তো সাদা নয় । আপনার যেমন সাদা মনে কাদা নেই !!!

বকবক ছাড়ুন । কথাটা বলবেন তো !
মানে
আহা বলুন না !!!

বলেই ফেলি

হ্যাঁ হ্যাঁ হ্যাঁ
লেখা আছে :- টিপিয়া ডাকিবেন ।
++++++++++
এক বেচু বাবু ডায়াবেটিসের একটা ওষুধের ডিটেলিং করছেন ডাক্তার বাবুর কাছে ।
পুরোনো মলিকিউল । তবু বেচু বাবু  একটা বড় ছবি দেখিয়ে ( একজন নগ্ন পুরুষ, শুধু লজ্জাস্থানটা একটা বড় পাতায় ঢাকা ) “ অ” থেকে “৺ ” বলেই যাচ্ছে ।
ডাক্তার বাবু উসখুস করছেন । কিছু বলতেও পারছেন না । অবশেষে শেষ হলো সেই দীর্ঘ ডিটেলিং ।
সমাপ্তির পর বেচু বাবু প্রশ্ন করলেন ডাক্তার বাবুকে :- কোনো প্রশ্ন স্যার ?

একটাই প্রশ্ন !

কি স্যার ?

আচ্ছা, ওই পাতাটা কি পাতা ?

স্যার, এটা তো বলতে পারবো না । তবে, আমাদের মেডিক্যাল ডিপার্টমেন্টকে চিঠি লিখে জেনে আপনাকে বলবো স্যার !!!

এ বাবা, আপনি এত জানেন, অথচ এই পাতাটার নাম জানেন না ?

সত্যি স্যার !!! জানি না !!

আমি বলি ?

বলুন বলুন

সিম্পল !!! ওটা ধনেপাতা !!!

###########








No comments: