Pages

Monday, December 28, 2009

BMTPA এর পিকনিক ২৭/১২/২০০৯

ঠাণ্ডাটা এবার জম্পেশ পড়েছে।কিছুদিন আগে মনে হচ্ছিল, ঠাণ্ডা না পড়লে চড়ুইভাতিটা জমবে তো? ভাবনা দূর। হৈ হৈ করে ঠাণ্ডা পড়ে গেল। প্রথম আশঙ্কা দূর অস্ত। দ্বিতীয় আশঙ্কা বাঙ্গালির সময়জ্ঞান! এটা বিশ্ববিখ্যাত! ভয়ে ভয়ে ছিলাম। আমার সময়জ্ঞান তো গিনেস বুকে উঠেছে। সক্কালবেলা আমার স্টেপনী/ব্রাহ্মণী, ঠেলা দিয়ে লেপের ওম থেকে জোর করে উঠিয়ে দিল। আমি বললাম- আঃ, করো কি? দেরী আছে তো!!! না, না, ওঠো। ৭.৩০ টা বাজে। বিএমটিপির বাস বাগুইআটিতে ৯.৩০ টার সময় আসবে।
আমি উবাচ- “ধূ্স্, এরা বলে, কিন্তু গিয়ে দেখবে দাঁড়িয়ে আছি, বাগুইআটিতে।” “তুমি উৎপলকে ফোন কর তো!” অগত্যা, উৎপলকে ফোন। ফোন বেজে গেল। আবার ফোন। এবারও একই অবস্থা! বিজয়ের হাসি আমার মুখে। ব্যাটা উৎপল ঘুম থেকে ওঠেই নি। আরাম করে গরম চায়ে চুমুক দিচ্ছি, উৎপলের ফোন।“দাদা, আমি টয়লেটে ছিলাম, ফোন ধরতে পারিনি। ৯.০৫ এ উল্টাডাঙ্গায় বাস আসবে। আমি ওখান থেকে উঠব।” আমি বললাম- শোনো, বাসে উঠে আমাকে ফোন করো, আমি বাড়ী থেকে বেরিয়ে পড়ব। ততক্ষণে স্টেপনী/ব্রাহ্মণী রেডি। অগত্যা, মধুসূদন। আমিও রেডি হলাম। ঠিক, ৯.০৬ এ উৎপলের ফোন।“দাদা, উঠে পড়েছি, আপনারা রওনা দিন।” এম্মা বলে কি??? এরা কি বাঙ্গালি? তড়িঘড়ি করে ওনাকে ট্যাঁকে গুঁজে, মোড়ে দাঁড়ালাম। বরাতজোর! কার্ত্তিকের নতুন অটো! উঠে পড়লাম। কার্ত্তিককে বললাম, একটু জোরে ছোটা বাবা, না হলে পিস্টিজে গ্যামাক্সিন!! বাগুইআটিতে নেমে দেখি, বারবি ডল। পাশে- এক লম্বু। কাছে গিয়ে বুঝলাম, উশ্রী আর অভিষেক। দূর থেকে দেখি, এক হ্যাণ্ডসাম ভদ্রলোক, মাথায় টুপি আমাদের দিকে এগিয়ে আসছেন। “ঘনাদা, আমি বাস থেকে নেমে পড়ে আগে এলাম। বাসটাকে দাঁড় করাতে হবে ঠিক জায়গায়, বাস আনন্দকে তুলে এখানে আসছে” কে রে বাপ? ওম্মা!!!! এযে, উৎপল!!!!!!! কিছু বলার আগেই বাস এসে পড়ল। নামল, “বাবা”“বাবা” দেখতে একটি ছেলে। গালে দাড়ি। জড়িয়ে ধরল! ঘনাদা!!!!!!!
আবার চমক! এযে প্রো!!!!![ কৃষ্ণের অষ্টোত্তর শতনামের মত, এটি একটি।]প্রসেনজিৎ বাড়ুজ্জে। উঠে পড়লাম। সবাই হৈ হৈ করে উঠল। জায়গা পেলাম, মাথায় ইন্দ্রলুপ্ত, কিন্তু গণ্ডদেশে আলুলায়িত কেশ, এরকম এক ভদ্রলোকের পাশে। বিমোচন ওরফে বাসু। হৈ হৈ আর গপ্পোর মধ্যে বাস এগিয়ে চলেছে। হঠাৎ , সামনের সিট থেকে একটি সুন্দরী মেয়ে, বলে উঠল- জেঠু, চিনতে পারছ? চিনলে তো, হ্যাঁ বলব!!! রাগ করলে মেয়েদের সুন্দর দেখায়।( অবশ্য এখানে সবাই দেখতে সুন্দর/সুন্দরী, একজন আর তার বর ছাড়া) মেয়েটি গাল ফুলিয়ে বলল- আমি লোপা! খুব তো বংশের মেয়ে বল, চিনতেই পারলে না!!!!ঠিক, সামনের সিটে আর একজন সুন্দরী। হেসে বলল- আমি নিবেদিতা! লাল সোয়েটার পরা একজন জড়িয়ে ধরল। গুরু রু রু রু!!!!! দেখি, আদি ও অকৃত্রিম- অজয়!!!! যাই হোক, এই করতে করতে গুস্তিয়া!!!!!!
নেমেই , গরম গরম কচুরী, ফাষ্টোকেলাস আলুর দম! আর রসগোল্লা! আহা! “স্বর্গ এসেছে নামি”। একটু পরে গরম গরম “কফির পায়েস!”( চিনি বেশী হয়েছিল।, পরে নীরব কর্মী সুবীর চাটুজ্জে অন্য ভালো কফি, প্রত্যেকের হাতে ধরিয়ে দেয়।)। দেবাঙ্কনের মাও এসেছিলেন! আর এক নীরব কর্মী। দিয়ার মা আর বাবা! সব মিলিয়ে একটা পরিবার! ইতিমধ্যে বিমোচনের কাছে জেনে গেছি, ওর চেয়ে দু বছরের বড় দাদা বুদ্ধ ওরফে বিশোভন আমার মালদার পুরনো বন্ধু। বিশোভনের পরিচালনায় “মিছিল” নাটকে অভিনয়ও করেছি। নাটক, গান, কবিতা “বাসু আর বুদ্ধের”বংশগত। হবে নাই বা কেন? কার ছেলে দেখতে হবে তো!!!! বিখ্যাত নাট্যকার প্রয়াত বিধায়ক ভট্টাচার্য্যের ছেলে এরা!!!! জমজমাটি ব্যাপার। রঙ্গীন “শিশুরা” দোলনায় দুলছে, হাসছে, গল্প করছে। হাঁড়ি ভাঙ্গা খেলা শুরু হল। হাঃ! হাঃ হাঃ! যা কাণ্ড!!! উৎপল তো অফিসিয়াল এখানে। মুখে পুরুরুরু বাঁশী। পম্পা তো সারা জায়গাটা ঘুরে নিল।
শতরঞ্চি পেতে বসল গানের আসর! বাসু বলল- “আমি হ্যাংলা গায়ক”। খুব রাগ হলো! আমার চেয়েও হ্যাংলা কেউ আছে নাকি??? শুরু করে দিলাম। দেবাঙ্কন ( ভুল হতে পারে। দেবাঙ্কর বলে আর একটি ছেলে ছিল। তবে এই ‘র’ আর ‘ন’ এর রনে আমি নেই,বাবা লোকনাথকে স্মরণ করে, ঠিক করে নিস তোরা, আমি তো তোদের পাড়ায় থাকি না!) গীটার বাজাচ্ছে। ছেড়ে দিল বাজনা। খেই পাচ্ছে না তো। তারপর বাসু, নীলাদ্রী, সুরঞ্জিতা,প্রলয়; সরকার আরও অনেকে।বাসু, নীলাদ্রী তো জমিয়ে দিল। সরকার তার সুপ্ত প্রতিভা বিকশিত করে দেখিয়ে দিল।
এবার খাওয়া। আমি লুকিয়ে খেলাম। পাছে আমাকে লোকে সরকারের চেয়েও বড় রাক্ষস বলে।(হেঃ, হেঃ, হেঃ)। বাসু, মনে হলো দেবতারা যেমন দৃষ্টি দিয়ে খান, সেরকম খেল। আনন্দ খালি ভি.ডি.ও করে গেল। আর হেসেই গেল। রবি, ক্রিকেট খেলতে গিয়ে পা মচকে পা টাকে ফাইলেরিয়ার পা বানিয়ে ফেলল। কাকে ছেড়ে কার কথা বলি????? এ বলে আমায় দেখ, ও বলে আমায়। অনেকের কথা বাদ পড়ে গেল। কিছু মনে করিস না বাপ!

নিলয়, সুবীর, প্রো, অভিষেক, সৈকত-------- অজস্র ধন্যবাদ!!!!
আসছে বছর আবার হবে!!!!!!!

No comments:

Post a Comment